মৌমিতা চক্রবর্তী
হুগলির উত্তরপাড়ায় এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। মৃতের নাম মৌমিতা চক্রবর্তী(৩০)। কোতরং পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দমোটর ধর্মতলা এলাকায় থাকতেন মৌমিতা। শুক্রবার রাতে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতার তলপেটে দুটো কাটা দাগ দেখেই পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়। এর পরই দেহের ময়নাতদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা।
মৌমিতার পরিবার জানিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মৌমিতা। তাঁকে প্রথমে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৩ দিন চিকিৎসা চলে সেখানে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মৌমিতাকে তাঁর স্বামী সঞ্জু চক্রবর্তী হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। শুক্রবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর মৌমিতার দেহ ভাল ভাবে মুড়ে পরিবারের হাতে তুলে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে দেহ বাড়িতে নিয়ে এসে র্যাপার খোলা হয়। তখনই মৌমিতার তলপেটে কাটা দাগ দেখতে পান তাঁরা। এর পরই তাঁদের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে কোনও অস্ত্রোপচারের বিষয়ে পরিবারকে জানানো হয়নি। তা হলে তলপেটে ওই কাটা দাগ কেন, প্রশ্ন তুলেছেন মৌমিতার পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সন্দেহ অস্ত্রোপচার করে কোনও অঙ্গ তুলে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। দেহ ময়নাতদন্তের দাবিতে এর পরই উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ জানাতে যায় মৌমিতার পরিবার এবং এলাকাবাসীরা। হাসপাতাল ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়ায় তারা ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় পুলিশ। এর পরেই আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মৃতার পরিবার। মৃতদেহ পুরসভার হাসপাতালে রেখে দেওয়া হয়েছে। শনিবার শ্রীরামপুর আদালতে দেহের ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করা হবে বলে মৌমিতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
মৌমিতার বাবা ধ্রুব কুণ্ডু বলেন, “ মেয়ের জ্বর হয়েছিল। খেতে পারছিল না। এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করলাম। পরে হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কী করে মেয়েটা মারা গেল বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপ দাস বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে মেয়েটা ভুগছিল। কয়েকটা হাসপাতাল ঘুরে এনআরএসে ভর্তি করা হয়।তা র পর হাওড়ার ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “যখন ভর্তি ছিল বাড়ির লোককে দেখা করতে দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভিডিয়ো কলে মৌমিতাকে দেখাত। মারা যাবার পর এমন ভাবে প্যাকিং করে দিয়েছে যে দেখেই সন্দেহ হয় পরিবারের লোকেদের।”