পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র।
জিরাটের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় গঙ্গার কাছেই খাসজমি থেকে মাটি কাটার অভিযোগ ওঠে কয়েক মাস আগে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোক পোদ্দারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে। প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই এলাকায় ভাঙন রোধে গঙ্গার পাড় বাঁধার কাজ করছে যে সংস্থা, তারাই ওই অনিয়ম করেছে। বিতর্কের জেরে বেশ কিছুদিন ওই কাজ বন্ধ ছিল। ফের তা চালু হয়েছে।
গত শুক্রবার ওই জায়গা পরিদর্শন করেন সেচ দফতর ও জেলা পরিষদের আধিকারিকরা। জেলা পরিষদের সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী জানান, গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের সাড়ে ৬ কোটি টাকায় জিরাটের চর খয়রামারিতে গঙ্গার ২৩০০ মিটার পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। মেদিনীপুরের একটি সংস্থা কাজের বরাত পেয়েছে। তারাই কয়েক বিঘা খাসজমি থেকে অনেকটা গভীর করে মাটি কেটেছিল। মনোজ বলেন, ‘‘বিষয়টি জেনেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই সংস্থাকে জরিমানা করা হয়। খাসজমি থেকে মাটি কাটা বাবদ সরকারের যে রাজস্ব প্রাপ্য, সেই টাকাও ওই সংস্থার কাছ থেকে আদায় করা হবে। বন্ধ থাকা কাজ শুক্রবার থেকে চালু হয়েছে।’’
চর খয়রামারিতে গঙ্গার ভাঙন জ্বলন্ত সমস্যা। ভাঙনের কবলে পড়া একটি স্কুল সম্প্রতি অন্যত্র অস্থায়ী জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে। গঙ্গা থেকে বেশ কিছুটা তফাতে স্কুলের স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ চলছে। জিরাট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অশোকের অভিযোগ, ‘‘বিপুল পরিমাণ মাটি কেটে নেওয়া হয়েছিল। ওই জায়গায় ১০০ দিন প্রকল্পে কাজ হয়েছিল। কিন্তু, ইচ্ছেমতো মাটি কাটা হল। ভাঙন কবলিত এমন জায়গায় মাটি কাটার ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া উচিত ছিল।’’ গোটা বিষয়টি নিয়ে গ্রামের লোকজনও ক্ষুব্ধ।
শুক্রবার মনোজ বাদেও বিডিও (বলাগড়) নীলাদ্রি সরকার, সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর বিভাগের (২) এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার গৌতম অধিকারী, জেলা পরিষদের ক্ষুদ্রশিল্প কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দাস, বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পাল-সহ অন্য জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি দফতরের আধিকারিকরা ওই জায়গা ঘুরে দেখেন। তার পরে ব্লক অফিসে বৈঠক হয়। মনোজ বলেন, ‘‘কাজের অগ্রগতি দেখা হল। আগামী মার্চ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে ঠিকাদার সংস্থাকে।’’