বাড়িতে ভাঙচুরের নিদর্শন দেখাচ্ছেন আক্রান্ত মহিলা। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
তিন দিন মূলত কিছু হুমকির অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। এ বার মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের সিপিএমের এক মধ্যবয়সি মহিলা প্রার্থীর চুলের মুঠি ধরে মাটিতে আছড়ে ফেলে মারধরের অভিয়োগ উঠল তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতের ওই হামলায় বাধা দিতে গেলে প্রার্থীর পরিবারের এক কিশোরকে চেলাকাঠ দিয়ে মেরে ডান হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ওই প্রার্থীর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। ওই রাতেই সিপিএম প্রার্থীর পরিবারের তরফে সেখানকার মহিলা তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী বাসেদ আলি, তার ভাই সাদেক আলি-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সাদেকের দাবি, “মিথ্যা অভিযোগ। সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার কথা বলে ওই প্রার্থীকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল দলের ছেলেরা।”
শুধু এই একটি ঘটনা নয়, মনেোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য শাসক দল সন্ত্রাসের নানা রাস্তা নিয়েছে এবং মহিলাদেরও রেয়াত করা হচ্ছে না জানিয়ে নির্বাচন কমিশন এবং মহকুমার সংশ্লিষ্ট থানাগুলিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিরোধীদের তরফে।
ওই রাতে তিরোল পঞ্চায়েতেরই আর এক গ্রামে এক অবিবাহিতা সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতেও তৃণমূলের লোকজন চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মনোনয়নপত্র তুলে না নিলে ‘বড় ক্ষতি’ করে ভবিষ্যতে তাঁর বিয়ে দেওয়ায় বাধা দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে ওই পরিবার জানিয়েছে। ওই প্রার্থীঅজ্ঞাতপরিচয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
চাপ বাড়লেও দুই মহিলা প্রার্থীই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না। পুলিশ জানায়, মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অন্য ক্ষেত্রে খবর পাওয়ামাত্র ওই রাতে পুলিশের গাড়ি দ্রুত পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা পালায়। তাদের ফেলে যাওয়া চারটি মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।
সিপিএমের আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ, বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য শক্তিমোহন মালিক বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে আমরা প্রতিটি থানায় জানাচ্ছি। দফায় দফায় নির্বাচন কমিশনেও জানানো হচ্ছে।” পক্ষান্তরে, তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, “আমাদের দলের তরফে কোথাও কোনও ভীতি প্রদর্শন হয়নি। প্রশ্নও নেই। দলের নির্দেশমতো মানুষের রায় নেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।’’
রামেন্দু এই দাবি করলেও বিজেপি প্রার্থীদের উপরেও হুমকি অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ। শনিবার ভাদুর পঞ্চায়েতের এক বিজেপি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছেন জানিয়ে দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুশান্ত বেরার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের মোটরবাইক বাহিনী আমাদের ৫০-৬০ জন প্রার্থীকে হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এবং থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।”