গীতা পাত্র। ছবি: দীপঙ্কর দে।
কয়েক মাস ধরে বিধবা ভাতা না পাওয়ায় পুরসভায় খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন ডানকুনির বাসিন্দা গীতা পাত্র। গিয়ে জানলেন, তিনি ‘মারা গিয়েছেন’। সরকারি দফতরে তাঁর মৃত্যু-শংসাপত্র (ডেথ সার্টিফিকেট) জমা পড়েছে। তাতেই ভাতা বন্ধ হয়েছে। অতঃপর নিজেকে ‘জীবিত’ প্রমাণ করতে পুরসভার কর্তাদের দোরে দোরে ঘুরছেন মহিলা।
বিষয়টি জানাজানি হতে শোরগোল পড়েছে। কী করে এমনটা হল, কে গীতাদেবীর ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ জমা দিল, এর পিছনে কোনও চক্র রয়েছে কি না, এমন নানা প্রশ্ন উঠছে। উত্তর অবশ্য মিলছে না। ডানকুনি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অচিন্ত্য কর্মকার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। সমস্যার দ্রুত সমাধান করে ওঁর ভাতা ফের চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’’ মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) সম্রাট চক্রবর্তীর আশ্বাস, জীবিত মানুষের নামে ডেথ সার্টিফিকেট কী করে জমা পড়ল,
দেখা হবে।
গীতাদেবী গৃহ সহায়িকার কাজ করেন। তিনি জানান, ২৮ বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। তাঁর সন্তান নেই। একাই থাকেন। গত ১০ বছর ধরে বিধবা ভাতা পাচ্ছিলেন। শেষ বার ভাতা পান জানুয়ারি মাসে। ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। টাকা না পেয়ে কিছু দিন আগে তিনি ব্যাঙ্কে যান। সেখান থেকে পুরসভায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। পুরসভায় এসে তিনি জানতে পারেন, তাঁর ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ জমা পড়ে গিয়েছে।
গীতাদেবী বলেন, ‘‘পুরসভার লোকেরা বললেন, আমার ডেথ সার্টিফিকেট জমা পড়েছে। অর্থাৎ, আমি মারা গিয়েছি। তাই ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কে ওই সার্টিফিকিট দিল, তা ওঁরা বলতে পারেননি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি গরিব মানুষ। মাসে ভাতার এক হাজার টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছি। বহুবার পুরসভায় গিয়ে ওই টাকা চালু করতে বলেছি। কিন্তু হয়নি। টাকাটা তাড়াতাড়ি চালু করলে ভাল হয়।’’