মায়ানমার থেকে আসা ইলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
করোনার চোখ রাঙানি রয়েছে বটে। তার মধ্যেই সরগরম জামাইষষ্ঠীর বাজার। তার জন্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। হাওড়ায় পাইকারি বাজারে ইলিশের দাম আপাতত হাজারের উপরই রয়েছে। খুচরো বাজারে তা আরও বেশি দামে বিক্রি হবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে জামাইষষ্ঠীর দিন সকালে আরও চড়া দামে ইলিশ বিক্রি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
তবে এখন যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে বাজারে, তা পদ্মার ইলিশ নয়। কারণ বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে বর্তমানে ভারতে ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ রয়েছে। এ পার বাংলার মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গত বছর পুজোর আগে শেষ বার ভারতে ৫০০ মেট্রিক ডন ইলিশ রফতানিতে অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
কিন্তু জামাইষষ্ঠীতে জামাইয়ের পাতে ইলিশ পড়বে না, তা মানতে পারছিলেন না অনেকেই। তার উপর মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাই মায়ানমার থেকেই ইলিশ আমদানির সিদ্ধান্ত নেন হাওড়া পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। তা এসে পৌঁছনোর পর থেকেই হু হু করে বিকোচ্ছে। কলকাতার বড় বড় বাজারেও ইলিশ যাচ্ছে এখান থেকেই।
হাওড়া পাইকারি বাজার সংগঠনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মায়ানমার থেকে ১৫০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা হয়েছে। সেখানকার ইরাবতী নদী থেকে মাছ এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, পদ্মার ইলিশের সঙ্গে কোনও তফাত নেই ইরাবতীর ইলিশের। পার্থক্য শুধু একটাই যে, দূরত্ব বেশি হওয়ায় জাহাজে করে মায়ানমার থেকে মাছ বরফে ঢেকে আনতে হয়েছে। সেই তুলনায় পদ্মার ইলিশ টাটকাই হাতে পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার বাজার খুলতেই প্রতি কেজি ইলিশের দাম ১১০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে বলে জানা গিয়েছে। খুচরো বাজারে দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। করোনায় উৎসবের সেই আমেজ না থাকলেও, মাত্র ১৫০ টনে চাহিদা মেটানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে ব্যবসায়ীদের মতে।
জামাইষষ্ঠীর বাজারে ইলিশের এই আকালের জন্য ঘূর্ণিঝড় ইয়াসকেও দায়ী করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে উপকূবর্তী এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্যজীবীদের ট্রলার এবং নৌকা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। তার উপর সমুদ্রে যাওয়ার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে ইলিশের জোগানের উপর তার প্রভাব পড়েছে।