বি-এড কলেজে ফোরামের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
অনুমোদন বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে রাজ্যের বেসরকারি ৩২৩টি বিএড কলেজ। গড়ে তোলা হয়েছে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল এডুকেশন ফোরাম’। রবিবার বিকেলে সংগঠনের তরফে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানের কলেজগুলিকে নিয়ে বৈঠক হল পোলবার রাজহাটের বারোলে একটি বেসরকারি কলেজে। সংগঠনের সভাপতি মলয় পীট বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অনৈতিক সিদ্ধান্তে রাজ্যের প্রায় ৩২ হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। পাশাপাশি কমপক্ষে ১২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা-সহ বহু মানুষের কর্মচ্যুত হওয়ার জোগাড়। এই পরিস্থিতিতে আগামী বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করব।”
মাস কয়েক আগে রাজ্যের ৩২৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করেছে বাবাসাহেব আম্বেডকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের সমস্ত বিএড কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তারই প্রতিবাদে গত ২৭ ডিসেম্বর ‘রাজভবন চলো’ এবং চলতি মাসের ৮ তারিখে দিল্লির যন্তর-মন্তরে ধর্নার ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আগামী ২৪ জানুয়ারি কলকাতায় বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাওয়ের ডাকদেওয়া হল।
বাবাসাহেব আম্বেডকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ ছিল, অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম মেনে বেতন দিচ্ছে না। সব কলেজে অগ্নিনির্বাপণ দফতরের শংসাপত্রও নেই। কলেজগুলি অবশ্য সাফ জানিয়েছিল, ইউজিসি-র নিয়ম মেনে অতিরিক্ত বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ফের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য পোর্টাল খুলে দিয়েছিল। সেখানে বেতন পরিকাঠামো, অগ্নিনির্বাপণের শংসাপত্র প্রভৃতি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে আগে চলতি বর্ষের অনুমোদন দেওয়া হোক, এই দাবিতে অনড় থেকে একটি কলেজও পুনরায় আবেদন পূরণ করেনি।
ওয়েস্টবেঙ্গল এডুকেশন ফোরামের সম্পাদক দিব্যেন্দু বাগ বলেন, “চলতি শিক্ষাবর্ষে বহুছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমাদের অনুমোদন দেওয়া হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু হল না। ফলে, বৃত্তিও মিলছে না পড়ুয়াদের।”
এই মুহূর্তে বিএড পড়া সকলেই রাজ্য সরকারের 'স্বামী বিবেকানন্দ মেধা বৃত্তি' হিসাবে বছরে ১৮ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। এছাড়াও অনগ্রসর শ্রেণিদের জন্য জন্য ‘ঐক্যশ্রী’, ‘ওয়েসিস’ নামক সরকারি ও সরকারি অনুমোদিত বৃত্তি ছাড়াও ভিন রাজ্য থেকে পড়তে আসা পড়ুয়াদের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারেরও কিছু স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে।