মিলের সামনে আন্দোলনকারীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
বছর ঘুরতে চলল, উৎপাদন বন্ধ রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলে। অবিলম্বে উৎপাদন চালুর দাবিতে বুধবার কলকাতায় মিলের প্রধান কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল বাম শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি অনুমোদিত ফেডেরাল চটকল মজদুর ইউনিয়ন। কিন্তু, পুলিশ সেই কর্মসূচি বানচাল করে দেয় বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কলকাতায় যেতে না পেরে স্মারকলিপি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় মালিকপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। বাধা দেওয়ার অভিযোগ পুলিশ মানেনি।
আর্থিক সমস্যা, শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওই জুটমিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। তার পরে একের পর এক বৈঠক এবং নানা টালবাহানার পরে মাঝে মিল খুললেও অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে, শ্রমিকদের দুরবস্থা কাটেনি। শ্রমিকদের অভিযোগ, এর আগে প্রশাসন বা শ্রম দফতর সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতা করলেও গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা এ ব্যাপারে
তাঁরা নিশ্চুপ।
এই পরিস্থিতিতে ফেডেরাল চটকল মজদুর ইউনিয়নের তরফে বুধবার কলকাতার প্রিন্সেপ স্ট্রিটে স্মারকলিপির কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মিলের গেটে এ নিয়ে নোটিস দেওয়া হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস দত্তের অভিযোগ, কর্মসূচির বিষয়টি জেনে পুলিশের তরফে ফোনে তাঁদের জানানো হয়, পুরভোটের আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকায় তাঁরা যেন ওই কর্মসূচি বাতিল করেন। দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘পুলিশকে আমরা বলি, বন্ধ কারখানার বা শ্রমিকদের সঙ্গে ভোটের আচরণবিধির সম্পর্ক নেই। তখন পুলিশ বলে, তাঁদের উপরে নির্দেশ রয়েছে, ওই কর্মসূচি করা যাবে না।’’
বুধবার দুপুরে আন্দোলনকারী কিছু শ্রমিক মিলের গেটে জড়ো হন। পুলিশ যায়। শেষ পর্যন্ত কর্মসূচি বাতিল করেন আন্দোলনকারীরা। গোটা বিষয়টি তাঁদের তরফে রাজ্য শ্রম দফতরে জানানো হয়। তাঁদের দাবি, মালিকপক্ষের কথায় পুলিশ কর্মসূচিতে বাধ সাধে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট অবশ্য বিষয়টি মানতে চাননি। মিলের সামনে আন্দোলনকারীদের জমায়েতে যাওয়া নিয়ে এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘জমায়েত হলে পুলিশ সেখানে যেতেই পারে।’’ শ্রীরামপুর শ্রম দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের দফতর তো বটেই, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও মিল খোলার ব্যাপারে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।’’