জাঙ্গিপাড়ায় স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দেওয়াল লিখন। ছবি: দীপঙ্কর দে।
শাসকদলের প্রার্থী-তালিকা ঘোষণার পরেই বিভিন্ন জেলায় ক্ষোভের আঁচ দেখা দিয়েছে। পছন্দের প্রার্থী টিকিট না-পাওয়ায় কোথাও অবরোধ, কোথাও পুলিশের ব্যারিকেড টেনেহিঁচড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করে কাঠকুটো জ্বালিয়ে দিয়েছেন দলের সমর্থকরা। শুক্রবার হুগলিতে দৃশ্যত তেমন কিছু না হলেও ক্ষোভের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে। টিকিট বণ্টনে দলের এক সাংসদের ভূমিকা নিয়ে পোড়খাওয়া কর্মীরাই প্রশ্ন তুলছেন। তবে, জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই টিকিট পাওয়া প্রার্থীদের নামে দেওয়াল-লিখন শুরু হয়ে যায়।
হুগলির ১৮টি আসনের মধ্যে ছ’টিতে প্রার্থী বদল হয়েছে। সিঙ্গুর এবং হরিপালে যথাক্রমে বেচারাম মান্না এবং তাঁর স্ত্রী করবী টিকিট পেয়েছেন। হুগলি লোকসভায় হারের পরে রত্না দে নাগকে প্রার্থী করা হয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ পান্ডুয়ায়। তবে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রত্না হাতের তালুর মতো পান্ডুয়া চেনেন। দলের যুযুধান নেতাদের সামলাতে দল এই চিকিৎসক-নেত্রীর কাঁধেই দায়িত্ব দিয়েছে। ২০১৬ সালে চন্দননগরে ইন্দ্রনীল সেন অল্প ব্যবধানে জিতেছিলেন। সেখানেও গোষ্ঠীকোন্দল চরমে। দলীয় কোন্দলের জেরে সেখানে পুরবোর্ড মাঝপথেই ভেঙে দেয় রাজ্য সরকার। যদিও ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘চন্দননগর পুরসভার কাজ আমি নিজে তদারকি করি। গত লোকসভা নির্বাচনেও আমাদের দল কিন্তু এগিয়ে ছিল। এ বার অন্তত ২৫ হাজার ভোটে জিতব।’’
চাঁপদানিতে আগের ভোটে তৃণমূল হেরে গিয়েছিল। এ বার সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে বৈদ্যবাটীর বিদায়ী পুরপ্রধান তথা দলের শ্রীরামপুর লোকসভার যুব সভাপতি অরিন্দম গুঁইনকে। ৪৩ বছরের অরিন্দম ২০১০ সালে কাউন্সিলর হন। পরের ভোটে জিতে পুরপ্রধান। তবে, চাঁপদানি শহর তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘‘আসলে আমাদের এক সাংসদের নিজস্ব কিছু সাপ-লুডোর অঙ্ক আছে।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে বলাগড় বিধানসভায় পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সেখানে দু’বারের বিধায়ক অসীম মাঝিকে বদলে সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে প্রার্থী করা হয়েছে। এলাকায় অসীমের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ভাল। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অসীমকে অনেক বুঝিয়ে মনোরঞ্জনকে প্রার্থী করা হয়েছে। গত লোকসভায় সপ্তগ্রাম এবং চুঁচুড়াতেও তৃণমূল ধরাশায়ী হয়। তবে সেখানে এ বারেও যথাক্রমে তপন দাশগুপ্ত এবং অসিত মজুমদারের উপরে তৃণমূল ভরসা রেখেছে। শ্রীরামপুরে এ বারেও দাঁড়াচ্ছেন চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়। উত্তরপাড়ার বিদায়ী বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এখন বিজেপিতে। ওই কেন্দ্রে এ বার তৃণমূলের বাজি অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক।
চণ্ডীতলায় স্বাতী খন্দকার, জাঙ্গিপাড়ায় স্নেহাশিস চক্রবর্তী এ বারেও তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন। তবে, তারকেশ্বরে রচপালের বদলে প্রার্থী হয়েছেন রামেন্দু সিংহরায়। পুরশুড়ায় জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের উপরে দলনেত্রী ভরসা রেখেছেন। খানাকুলে প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় নেতা নজিবুল করিম। আরামবাগে বিদায়ী বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা টিকিট পাননি। সেখানে দাঁড়াচ্ছেন বিজেপির রাজ্য যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ।