বাংলা ভাষা দিবস পালন উপলক্ষে পান্ডুয়া হারাধন চন্দ্র নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে আলোচনা। — নিজস্ব চিত্র।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাকে সম্মান জানাতে বুধবার দিনভর হাওড়া ও হুগলি জুড়ে চলল নানা অনু্ষ্ঠান।
এ দিন সকালে শ্রীরামপুরের মাহেশের নেহরুনগরের গঙ্গাপাড়ে কেষ্ট মুখার্জি স্মৃতি উদ্যানে অনুষ্ঠান হয়। উদ্যোক্তা ছিল নিখিল ভারত বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের শ্রীরামপুর শাখা। অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা’ গানের মাধ্যমে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় মাইক-বক্স ব্যবহার করা হয়নি। খালি গলায় গান, আবৃত্তি, কবিতাপাঠ হয়। আয়োজক সংগঠন ছাড়াও চন্দননগরের রবিতীর্থ, শ্রীরামপুরের সুরাঙ্গন অভিজ্ঞান, নৃত্যছন্দম ডান্স অ্যাকাডেমি, অঙ্কুর সংস্কৃতিক সংস্থার তরফে অনুষ্ঠান করা হয়।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা যোগ দিয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক কুহুক ভূষণ-সহ অনেকে। হরিপালের গজা উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে দিনটি পালিত হয়। কোন্নগরে ভাষা শহিদ স্মারকে সম্মান জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান স্বপন দাস।
আলোচনায়, গানে, আবৃত্তিতে ‘অমর একুশে’ পালিত হল শ্রীরামপুরের ‘আ মরি বাংলা ভাষা’র উদ্যোগে। স্থানীয় পুরসভার সহযোগিতায় বিকেলে অনুষ্ঠান হয় গঙ্গার তীরে ভাষা বাগানে। শহিদ স্মারক স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। কথায়-সুরে ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী ব্রততী মজুমদার, অঙ্কিতা মুন্সী। ‘ভাষার মৃত্যু এবং...’ শীর্ষক বিষয়ে আলোচনা করেন দুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তথা লেখক ও অনুবাদক অরুন্ধতী ভট্টাচার্য।
এ দিন বলাগড়ের জিরাট কলোনি হাই স্কুলেও পালিত হল ভাষা দিবস। শ্রদ্ধা জানান প্রধান শিক্ষক আব্দুল শরীফ শেখ-সহ আরও অনেকে। চন্দননগর খলিসানি মহাবিদ্যালয়ের পড়ুয়া-সহ অধ্যাপকরা নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। ইটাচুনা বিজয় মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও দিনটি মর্যাদা দিয়ে পালন করেন। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের উদ্যোগে পোলবা থানার সহযোগিতায় হুগলি অনগ্রসর জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে দিনটি পালন করা হয়।
গুজরাতের সুরাতে সোনার কাজে যান এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার যুবক। অনেকেই সেখানে সংসার পাতেন। এই সব স্বর্ণকার কারিগরদের সন্তানদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার জন্য সেখানকার হরিপুরার ভবানীবাড় মন্দির রোডে বছর দু’য়েক আগে গড়ে উঠেছে সুরাত বিদ্যাসাগর বাংলা বিদ্যালয়। নার্সারি বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া ৬৭ জন। এ দিন সেখানেও আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হল। বলাগড়ের কলেজ-শিক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেখানে বেড়াতে গিয়েছেন। তা জেনে বিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মাতৃভাষা এবং বিদ্যাসাগর সম্পর্কে কচিকাঁচাদের কাছে আলোকপাত করেন পার্থ। স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বাসুদেব অধিকারী। জানা গিয়েছে, প্রথম শ্রেণিতে এই ছাত্রছাত্রীরা সুরাত মিউনিসিপাল কমিশনের অধীনে একটি স্কুলে ভর্তি হবে। সেখানে বাংলা পড়ানো হয়।
বুধবার যৌথ ভাবে ভাষা দিবস পালন করল উলুবেড়িয়া পুরসভা ও উলুবেড়িয়া কলেজ। এই উপলক্ষে পদযাত্রা হয়। শ্যামপুরের খাজনা বাহালা হাই মাদ্রাসায় ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।