দুপুরে অ্যানাস্থেশিয়া করে অস্ত্রোপচারের পরে শিশুটির আর জ্ঞান ফেরেনি। প্রতীকী ছবি
তিন বছরের এক শিশুপুত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার একটি নার্সিংহোমে। মৃত শিশুটির আত্মীয়দের বিরুদ্ধে নার্সিংহোমে দফায় দফায় ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি, রাত পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে অভিযুক্ত চিকিৎসকের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অবরোধ তুলতে দফায় দফায় পুলিশ পৌঁছেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে, হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার সাঁতরাগাছি মোড়ের একটি নার্সিংহোমে।
পরিবার সূত্রের খবর, সার্থক রায় নামে ওই শিশুটি হাওড়ার রামরাজাতলা এলাকার ধর্মতলার বাসিন্দা সৌরভ রায় ও মামণি রায়ের সন্তান। এ দিন হাইড্রোসিল অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে ভর্তি করা হয় ওই নার্সিংহোমে। অভিযোগ, দুপুরে অ্যানাস্থেশিয়া করে অস্ত্রোপচারের পরে শিশুটির আর জ্ঞান ফেরেনি। সংজ্ঞাহীন শিশুটিকে ভর্তি করানোর জন্য নার্সিংহোমের তরফে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরা হয়। তখন সঙ্গে ছিলেন শিশুটির এক আত্মীয়। পরিবারের আরও অভিযোগ, পথেই শিশুটি মারা যায়। কিন্তু সেই খবর জানানো হয়নি সঙ্গে থাকা আত্মীয়কে। দেহ নিয়ে ফের হাওড়ার রামচরণ শেঠ রোডের ওই নার্সিংহোমে ফিরে এলে আত্মীয়েরা বিষয়টি জানতে পারেন। এর পরেই তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
পুলিশ ও ওই পরিবার সূত্রের খবর, ওই পরিবারটির স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। কিন্তু সেই কার্ড জমা দেওয়া সত্ত্বেও রোগীর পরিবারের থেকে আট হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ শিশুটির জেঠা মানস রায়ের। তাঁর আরও দাবি, টাকা জমা দেওয়ার পরেই অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
সৌরভের অভিযোগ, ‘‘অস্ত্রোপচার শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টা পরে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান, ওর জ্ঞান ফিরছে না। কলকাতার নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হবে, কারণ তাঁদের নার্সিংহোমে আইসিইউ নেই।’’ এর পরে নার্সিংহোমের লোকজনই শিশুটিকে নিয়ে কলকাতার একাধিক নার্সিংহোম ও হাসপাতালে ঘোরেন। তবে, পথেই মারা যায় শিশুটি।
অভিযোগ, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রামরাজাতলা থেকে লোকজন চলে আসেন। নার্সিংহোমটি অবিলম্বে বন্ধের দাবি তুলে ভাঙচুর শুরু হয়। রাত ৮টা থেকে শুরু হয় অবরোধ। নার্সিংহোমের আশপাশের বাসিন্দাদের দাবি, সেখানে প্রায়ই চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী-মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। নার্সিংহোমটি বন্ধ করার এবং অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেফতারির দাবি তুলে শুরু হয় অবরোধ। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশবাহিনী পৌঁছয়। অবরোধ না ওঠায় রাতে আরও পুলিশ যায়।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিশুটির পরিবার অভিযোগ করলেই তদন্ত শুরু হবে।’’ এ দিকে, ফোন করে বা নার্সিংহোমে গিয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।