মারামারি ঘটনায় আক্রান্ত ছাত্রদের। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সংগঠনে ‘খবরদারি’ নিয়ে লাঠি, রড হাতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে বৃহস্পতিবার তপ্ত হল গোঘাটের বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয় চত্বর। কলেজের ভিতরে বহিরাগতরা ঢুকে দাপাদাপি করে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের ছ’জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে চার জনের মাথা ফাটে। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। ততক্ষণে অবশ্য বহিরাগতরা পিঠটান দেয় বলে কলেজ সূত্রের দাবি।
আহত চার ছাত্রকে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ পরমার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে গোলমালে কলেজে ছাত্রদের মধ্যে মারপিট হয়েছে। পুলিশ ডেকেছি। আহতদের হাসপাতালে পাঠিয়েছি। কিছু বহিরাগত ছিল বলে জেনেছি। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশে আভিযোগ জানানো হচ্ছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। মারামারিতে জড়িয়ে পড়া দু’পক্ষই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনায় দায় পরস্পরের উপর চাপিয়েছে তারা।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দ্বিতীয় সিমেস্টারের জন্য রেজিস্ট্রেশন ছিল। দুপুরে ওই প্রক্রিয়া চলার সময়েই গোলমাল শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি ছাত্রদের মধ্যে কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের সহ-সভাপতি শেখ আজহারের দাবি, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কাজে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ‘অসামাজিক’ কাজের জন্য সংগঠনের পীযূষ ঘোষ নামে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আজহারের অভিযোগ, ‘‘দুপুর আড়াইটে নাগাদ পীযূষের নেতৃত্বে বহিরাগতেরা এসে আমাদের উপরে চড়াও হয়। লাঠি, রড, ভাঙা বোতল নিয়ে হামলা করে ওরা কলেজে খবরদারি করতে চেয়েছিল। মার খেয়েও আমরা প্রতিরোধ করায় সেটা পারেনি।’’ আজহার বাদেও রক্তাক্ত অবস্থায় শেখ আসাদুল, অভিজিৎ পাল এবং রুদ্রপ্রসাদ মোহন্তকে হাসপাতালে ভর্তি করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পীযূষের দাবি, তাঁর নাম ঘটনায় মিথ্যা জড়ানো হচ্ছে। একইসঙ্গে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘জেনেছি, আজহাররা অন্যায় ভাবে পড়ুয়াদের কাছে টাকা চাইছিল। আমাদের কয়েক জন প্রতিবাদ করায় ওরাই প্রথম মারে। পরে পাল্টা প্রতিরোধ হয়।’’ পীযূষের দাবি, তাঁদের গোষ্ঠীর দুই ছাত্র রনি রায় এবং শুভদীপ দিগের আহত হন। কামারপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে।
টিএমসিপি-র আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মুন্সী মাহামদুল করিম ওরফে পাপ্পু বলেন, ‘‘শুনেছি বহিরাগতেরা এসে গোলমাল করেছে। এতে সংগঠনের কোনও ব্যাপার নেই। ঠিক কী ঘটেছে, ভাল করে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’