উদ্বোধনী ফলকে তাঁর নাম কেন নীচে রয়েছে, এই প্রশ্ন তুলে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এই ঘটনায় তিনি ‘অপমানিত’। ওই উদ্বোধনী ফলকে প্রথমেই রয়েছে বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তফসিলি জাতি, জনজাতি উন্নয়ন এবং বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান অসীম মাঝির নাম। অসীমের নাম করেননি মনোরঞ্জন। তবে বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়কের নাম ফলকের প্রথমে থাকা নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন বর্তমান বিধায়ক। আর এই ঘটনা ঘিরেই মনোরঞ্জন এবং অসীমের দ্বন্দ্বের জল্পনা শুরু হয়েছে নতুন করে। যদিও, মনোরঞ্জনকে নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি অসীম।
হুগলির বলাগড়ের জিরাটের ভূমিপুত্র ছিলেন পঞ্চানন কর্মকার। মুদ্রণশিল্পে তাঁর অবদান স্মরণীয়। তাঁর স্মৃতিতে ‘পঞ্চানন কর্মকার স্মৃতি সংগ্রহশালা’ তৈরি করেছে বলাগড় বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতি। মঙ্গলবার ছিল তার উদ্বোধন। কিন্তু শুরুতেই তাল কাটে। উদ্বোধনের সময় হঠাৎ সভামঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে চলে যান তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন। স্মৃতি সংগ্রহশালার উদ্বোধনী ফলকে প্রথমেই রয়েছে বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক অসীমের নাম। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হুগলি সদরের মহকুমাশাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। এর পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে বর্তমান বিধায়কের নাম। মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘আমাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ অপমান করবে তা আমি জেনে বুঝে সহ্য করব না। যাঁরা এই কর্মকাণ্ডের ধারেকাছে নেই তাঁদের নাম উপরে বড় বড় অক্ষরে, আর আমার নাম অতি কৃপা-করুণা করে রেখে দিল! আপনারা গেলেই দেখতে পাবেন কাদের নাম রয়েছে। কোনও সরকারি দফতরের চেয়ারম্যান তিনি। এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে অপমান করার জন্য হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি নামের প্রত্যাশা করি না। গোটা দেশের লোক আমাকে চেনে। আমিও তো বঙ্গভূষণ পাওয়া লেখক।’’
মনোরঞ্জনের প্রস্থান নিয়ে বলাগড়ের বিডিও নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘বিধায়ক এসেছিলেন। তার পর চলে গেলেন। কী হয়েছে সে বিষয়ে আমাকে কিছু বলেননি।’’
মনোরঞ্জন তাঁর ক্ষোভের কথা বলতে গিয়ে অসীমের নাম বলেননি। তবে তাঁর লক্ষ্য যে বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তা বলছেন তৃণমূলেরই একটি অংশ। অসীমের বক্তব্য, ‘‘বিধায়ক কখন, কেন বেরিয়ে গিয়েছেন সেটা বলতে পারব না। আমি তখনও অনুষ্ঠানে পৌঁছইনি।’’ এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার বলাগড়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান বিধায়কের মধ্যে দ্বন্দ্বের আবহ তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকায় যোগ হল আরও একটি পর্ব।