—প্রতীকী চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের মধ্যেই ‘নারীদের সম্মান’ রক্ষার জন্য বুধবার চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের বিরুদ্ধে পোস্টার দেখা গিয়েছিল শহরের কিছু এলাকায়। এর সঙ্গে হুগলি-চুঁচুড়া পুরভবনে দাঁড়িয়ে বিধায়কের বিরুদ্ধে দলেরই এক মহিলা কর্মীর ‘কুপ্রস্তাব’ দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত ভিডিয়োও (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ‘ভাইরাল’ হয়েছে। তবে, মহিলা থানার দ্বারস্থ হননি। মহিলার তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অসিত।
বৃহস্পতিবার শহরের খাদিনা মোড়ে বিধায়কের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগকারিণীকে একহাত নেন কিছু মহিলা তৃণমূল কর্মী। তাঁরা অসিতের সুনাম করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই অভিযোগকারিণী অন্য কয়েক জন মহিলাকে ‘প্রমাণ স্বরূপ’ সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে বিধায়কের স্বভাব-চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। চুঁচুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে। ইতিমধ্যে পুরপ্রধান অমিত রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন দলেরই পুরসদস্যদের একাংশ। তার পরে ওই পোস্টার এবং ভিডিয়ো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে অনেকে মনে করলেও বিড়ম্বনা বেড়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে।
অসিতের বিরুদ্ধে হাতে লেখা পোস্টারে কারও নাম লেখা ছিল না। ওই মহিলা কর্মীর দিকেই ইঙ্গিত বিধায়কের। মহিলা তা মানেননি। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চকবাজার দেবীপার্কের একটি দেওয়ালে সাঁটা পোস্টারে ‘চুঁচুড়ার বিধায়ক দূর হটো, চুঁচুড়ার নারীদের সম্মান বাঁচাও’ লেখা দেখা যায়। অন্যান্য জায়গাতেও একই পোস্টার পড়ে। ভিডিয়োয় মহিলা তৃণমূল কর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘২০১৬ সাল থেকে আমি পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। কিন্তু প্রথম থেকেই কাজ করতে হত বিধায়কের বাড়ির অফিসে। মাস কয়েক আগে বিধায়ক কুপ্রস্তাব দেওয়ায় ওখানে যাওয়া ছেড়ে দিই। বর্তমানে পুরসভা পরিচালিত একটি স্কুলে কাজ করছি।’’
বিধায়কের দাবি, স্বামী-সহ ওই মহিলা তাঁর বাড়িতে কাজ করতেন। দু’জনকেই তিনি বেতন দিতেন। তিনি বলেন, ‘‘ছ’মাস আগে ওই মহিলা আমার বাড়িতে চুরি করে ধরা পড়েন। বিবেকের খাতিরে, পরিবারের কথা ভেবে পুলিশে দিইনি। এত দিন কিছুই বললেন না। এখন পুরসভায় অনাস্থা আসতেই আমার বিরুদ্ধে আজেবাজে বলতে শুরু করলেন, আর পোস্টারও পড়ে গেল! আসলে উনি দলকে চাপে ফেলতে চান।’’
এ নিয়ে তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। তাই মন্তব্য করব না।’’ হুগলি-চুঁচুড়ার পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘‘পুরসভার বাইরে কে কোথায় কাজ করেছেন, জানি না। তবে, ওই মহিলা পুরসভায় অভিযোগ জানালে বিষয়টি দেখা হবে।’’
ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন হুগলির প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। লকেটের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের মহিলা কর্মীরাই বিধায়কের কাছে নিরাপদ নন! এঁরাই আবার আর জি কর-কাণ্ডে ফাঁসির দাবিতে পথে নামেন!’’