চাঁপদানিতে নির্দল কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল। প্রতীকী ছবি।
সদ্য শেষ হওয়া ১০৮ পুরসভা ভোটে সবুজ ঝড় জারি থাকলেও শাসক দল তৃণমূলের কাঁটা এখন নির্দল। বস্তুত, তৃণমূল প্রার্থীদের পর এ বার সবচেয়ে বেশি ভোটে পেয়েছেন নির্দলরা। এ দিকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দলদের নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়েছেন চাঁপদানি তৃণমূল নেতৃত্ব। ২২টি ওয়ার্ডের ১০টি আসন জেতা তৃণমূলকে পুরসভা গঠন করতে হলে নির্দলদের লাগবেই। অন্য দিকে, স্বয়ং দলনেত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করা চলে না। উভয় সঙ্কটে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তৈরি করছেন এক নয়া ‘নীতি’। তাতে বলা হচ্ছে, নির্দল কাউন্সিলর যদি সমাজকর্মী হন, তখন তাঁর সমর্থন নিয়ে পুরসভা গঠনে কোনও আপত্তি থাকবে না।
প্রসঙ্গত, হুগলির চাঁপদানি পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের ১১টি জিতেছে তৃণমূল। ১০টি ওয়ার্ডেই জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। বাকি একটি আসন পায় কংগ্রেস। বোর্ড গঠনের জন্য ‘ম্যাজিক ফিগার’ থেকে মাত্র একটি কম আসনে দূরে থাকা তৃণমূল তাকিয়ে নির্দলদের দিকে। ওদিকে মমতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্দলদের নিয়ে দলের অবস্থান বদলায়নি। উল্টে যেসব তৃণমূল নেতা তাঁদের নিয়ে ঘুরছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর এতেই প্রমাদ গুনছেন চাঁপদানির তৃণমূল নেতৃত্ব। তাহলে উপায়?
চাঁপদানিতে প্রার্থী ঘোষণার পর দেখা যায় তৃণমূলে যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁরা নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তখন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন যে, দলের নির্দেশ অমান্য করে যাঁরা নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের বহিষ্কার করা হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। হুগলিতেই এমন ১৪ জন নির্দল প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।
পুরভোটের ফল ঘোষণার ঠিক পর দিন চাঁপদানি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুরেশ মিশ্র জানান, কয়েকজন নির্দল তাঁদের নিঃশর্ত সমর্থন করবেন বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু মমতার নির্দেশের পর সেই সুরেশ এখন বলছেন, ‘‘যাঁরা সোশ্যাল ওয়ার্কার এবং নির্দল হয়ে ভোটে জিতেছেন, তাঁদের নিয়ে বোর্ড (পুর) গঠন হবে।’’
তৃণমূল নেতা তারক সিংহের স্ত্রী শোভা নির্দল হিসেবে জিতেছেন। তিনি তৃণমূলকেই সমর্থন করবেন বলে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। আবার শ্রীকান্ত মণ্ডল নিজে নির্দল প্রার্থী হয়ে জিতেছেন। তাঁর মেয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রতীকে। ভোটের সময়ই অবশ্য শ্রীকান্ত জানিয়ে রাখেন, তিনি জিতলে তৃণমূলকেই সমর্থন করবেন। এখন শ্রীকান্তের মত, যদি তৃণমূল তাঁর সমর্থন না নেয়, কিছু করার নেই। তবে দলের টিকিট বন্টন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এই প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। এখন দেখার কোন ছাঁকনিতে নির্দলদের সমর্থন নিয়ে চাঁপদানি পুরসভা গঠন করে শাসক দল।