বিক্ষোভ: হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার গত বৈঠকের একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র।
শাসকদলের কাউন্সিলরদের বিক্ষোভের জেরে গত মাসে ভেস্তে গিয়েছিল হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার বোর্ড মিটিং। তার আগে প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে পুরকর্মীদের বেতনবৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ হয়। পর পর দু’টি বৈঠক ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ায় এই পুরসভারও পরিস্থিতি আগের দফার চন্দননগরের মতো হতে চলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। অগস্টের ১২ তারিখ বকেয়া সেই বিশেষ বৈঠক সারলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায়।
অমিতবাবু বলেন, ‘‘দলের কাউন্সিলরদের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। অতীতে কী হয়েছে, তা মনে রাখার লোক আমি নই। বকেয়া বৈঠকে অনেক কাজ হয়েছে। কোনও সমস্যা নেই।’’
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টিই রয়েছে তৃণমূলের দখলে। একটি সিপিএমের। জুলাই মাসের শেষ শনিবার পুরসভার সভাগৃহে বোর্ড মিটিং ডাকা হয়। বৈঠক শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে তা বয়কট করেন তৃণমূলের অন্তত ২০ জন কাউন্সিলর। অভিযোগ, তাতে নেতৃত্ব দেন পূর্বতন পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। তাঁর ক্ষোভ ছিল, পুরবোর্ডের তরফে শেষ মুহূর্তে আগের বৈঠকের কার্যবিবরণী দেওয়া হয়। তার জেরে সমস্যায় পড়েন কাউন্সিলররা। যা বলা হয়, বৈঠকে পুরসভার নথিতে উল্টো লেখা হয়।
ওই অভিযোগ পুরপ্রধান না মানলেও পুরবোর্ডের মেয়াদ ছ’মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই শাসক দলের অন্দরে অনৈক্যের সুরে প্রমাদ গোনেন অনেকে। আগের দফায় চন্দননগর পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুরবোর্ড ভেঙে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বসানো হয়েছিল প্রশাসক। নির্বাচিত পুরবোর্ড না-থাকায় বহু ক্ষেত্রে পরিষেবা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ক্ষেত্রেও জল সে দিকেই গড়াচ্ছে কি না, তা নিয়ে শহরের অনেকের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়। এক তৃণমূল কাউন্সিলরও মানছেন, ‘‘চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে শহরবাসীর। তাঁদের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার শপথ নিয়েই আমরা পুরবোর্ড গঠন করেছি। কিন্তু পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরুর আগেই যে সব কাণ্ড হচ্ছে তাতে চিন্তু করা ছাড়া আর অন্য উপায় কী আছে?’’
পুরপ্রধান অবশ্য বিশেষ বৈঠকের পরে পুরবোর্ড পরিচালনা নিয়ে যাবতীয় আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। শাসকদলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার নজরে আছে। আগের বিষয়ে আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়নি। আশা করি, কোনও সমস্যা হবে না।’’