পুর-পরিষেবা বন্ধ রাখতে পোস্টার লাগানো হচ্ছে। ছবি: তাপস ঘোষ।
বকেয়া মজুরির দাবিতে আজ, সোমবার থেকে যাবতীয় পুর-পরিষেবা (অ্যাম্বুল্যান্স ও শববাহী গাড়ি ছাড়া) বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকেরা। ফলে, সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা করছিলেন শহরবাসী। মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্লের সঙ্গে রবিবার বৈঠকের পরে শুধুমাত্র জল ও আলো পরিষেবা চালু রাখার আশ্বাস দিলেন শ্রমিক প্রতিনিধিরা। তবে, সাফাই-সহ অন্য সব বিভাগের অস্থায়ী শ্রমিকেরা কর্মবিরতি থেকে হটছেন না। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের একাংশও (যাঁরা পুর ভবনের ভিতরে কাজ করেন)। রবিবার থেকেই সাফাইকর্মীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে উচ্চস্তরে জানাব। শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের কাছে ১৫ দিন সময় চেয়েছি।’’ আন্দোলনকারীদের তরফে অস্থায়ী কর্মী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের অনুরোধে আপাতত জল ও আলো পরিষেবা জারি থাকবে। ১৫ দিন পরে মজুরি সমস্যার সমাধান না হলে সব পরিষেবা দেওয়া থেকেই বিরত থাকব আমরা। সোমবার সকাল থেকেই পুরসভার গেট আটকে অবস্থানে বসা হবে।’’ এই ‘অচলাবস্থা’ নিয়ে পুরপ্রধান অমিত রায়ের অভিযোগ, তাঁকে সরানোর জন্য চক্রান্ত চলছে। তিনি দলকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান। পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘পুরসভার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, সকলেই জানেন। তা-ও ইচ্ছাকৃত এ সব করানো হচ্ছে। পুরসভা বন্ধ রাখলে মানুষ পরিষেবা পাবেন না। পরিস্থিতি অন্য রকম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
মজুরির দাবিতে টানা কয়েক দিন ধরে পুরসভায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। শনিবার বোর্ড মিটিং চলাকালীন বিক্ষোভ শুরু করেন অস্থায়ী শ্রমিকেরা (নিরাপত্তা, রাস্তা সাফাই, পাম্প অপারেটরের মতো পুর ভবনের বাইরে যাঁরা শহর জুড়ে কাজ করেন)। কর্তৃপক্ষকে তাঁরা জানিয়ে দেন, সোমবার থেকে জলের মতো অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা-সহ সব বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির পথে তাঁরা হাঁটতে চলেছেন। এই অবস্থায় চাপে পড়েন পুর কর্তৃপক্ষ। যদিও, অনেক পুর সদস্যই (কাউন্সিলর) জল-আলোর মতো পরিষেবা নিজেরাই সচল রাখতে পারেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এমনটা আঁচ করে কর্মী ও শ্রমিকেরা রবিবার সকাল থেকেই পুর ভবন-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পোস্টার সাঁটতে শুরু করেন। সেখানে লেখা— ‘জলের পাম্প বা আলো নিজের হাতে চালনা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলে শ্রমিকেরা দায়ী থাকবেন না’। বেলায় এই মর্মে শুরু হয় মাইকে প্রচার।
খবর পেয়ে দুপুরে জরুরি ভিত্তিতে নিজের সরকারি আবাসে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মহকুমাশাসক। ঘণ্টাখানেকের বেশি চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে ওই প্রতিনিধিরা পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিক ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সন্ধ্যায় তাঁরা সিদ্ধান্তের কথা জানান।