জল দফতরের কর্মীদের বিক্ষোভ পুরসভায়। —নিজস্ব চিত্র।
মজুরির দাবিতে এ বার সরব হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা। সোমবার ওই কর্মীদের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের বৈঠকের কথা ছিল। তবে পুরপ্রধান অমিত রায় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে থাকায় বৈঠক হয়নি। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর বৈঠক হবে না জানতে পেরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মীরা। পরে পুরপ্রধান এলে কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান।
কর্মীদের ক্ষোভ, গত অগস্ট মাস থেকে অতিরিক্ত সময়ে কাজ করার টাকা বাকি। পাশাপাশি চলতি মাসের মজুরিও মেলেনি। অবিলম্বে বকেয়া মেটানোর দাবি জানান তাঁরা। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘দেরিতে হলেও প্রতি মাসেই বেতন দেওয়া হয়। চলতি মাসেও দেওয়া হবে। তবে, অতিরিক্ত সময়ে কাজ করার যে দাবি উঠছে, সেখানে কিছু গরমিল রয়েছে। তা খতিয়ে দেখা না পর্যন্ত বকেয়া মেটানো যাবে না।’’
জল দফতরে প্রায় ৪০ জন কর্মী রয়েছেন। এ দিন সকলেই পুরসভায় আসেন। কর্মী অসীম দাস বলেন, ‘‘কোনও মাসে ঠিক সময়ে টাকা পাই না। পাশাপাশি পাঁচ মাসের অতিরিক্ত কাজের টাকা বাকি। এ ভাবে চলতে থাকলে আমাদেরও অন্য কিছু ভাবতে হবে!’’
তৃণমূল পরিচালিত এই পুরসভায় মজুরির দাবিতে অস্থায়ী কর্মীদের বিক্ষোভ-আন্দোলন নতুন নয়। গত এপ্রিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মজুরি না মেলার অভিযোগে পুরসভার সামনে অবস্থান করেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনভুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের একটা বড় অংশ। একবার সঠিক সময়ে মজুরি না মেলায় দিন কয়েক কাজও বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্মীরা।
কিন্তু বারবার এই অবস্থা কেন?
পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় ২২০০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন এখানে। তাঁদের প্রাত্যহিক মজুরি ন্যুনতম ২৭০ টাকা। এঁদের মধ্যে প্রায় ছ'শো জনের মজুরি দেয় রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা (সুডা)। বাকি, প্রায় ১৬০০ জনের মজুরির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় পুরসভা থেকে। সঙ্গে রয়েছে পেনশন। সুডা-র টাকা ধরে পুরসভা থেকে মাসিক মজুরি ও পেনশনের জন্য ব্যয় করা হয় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। পুরসভার দাবি, তাদের মাসিক আয় ৭০ লক্ষ টাকার মতো। মিউটেশন বাবদ অতিরিক্ত আয় হলে সেই টাকা দিয়েই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হয়।