চন্দননগরের আলোকসজ্জা। — নিজস্ব চিত্র।
অন্ধকার সরিয়ে আলোর পথে চন্দননগর! গত দু’বছর পুজো এসেছে, গিয়েছে, কিন্তু অতিমারির কারণে ভিন জেলা, ভিন রাজ্য থেকে আলোর বায়না আসেনি চন্দননগরের ব্যবসায়ীদের কাছে। ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। এ বছর ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। আর তা-ই করে দেখাচ্ছেন চন্দননগরের আলোক শিল্পীরা।
চন্দননগরের আলোক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। করোনার থাবায় গত দু’বছর সেই শিল্প অন্ধকারে ডুবতে বসেছিল। এ বছর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার বহু বড় মণ্ডপে জ্বলবে চন্দননগরের আলো। এমনকি দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, মুম্বই, পুণের মতো শহরের মণ্ডপ এ বার সাজবে চন্দননগরের আলোয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইংল্যান্ড, আফ্রিকা, আমেরিকাতেও পাড়ি জমিয়েছে চন্দননগরের আলো। অতিমারির আগের জমানার মতোই।
চন্দননগরের আলোক শিল্পী তপন বসুর আলো সাজাবে কলকাতার আকড়া এলাকার পুজো মণ্ডপ। আকড়ার ন’টি পুজোর যৌথ ভাবে নাম হয়েছে আকড়া উৎসব পরিবার। এই উৎসব পরিবারের সব ক’টি বারোয়ারি মণ্ডপ সাজবে চন্দননগরে আলোয়। কোথাও আলোয় ফুটে উঠবে আফ্রিকার জঙ্গলের পশুদের ছবি, কোথাও থিম সম্প্রীতি ও উৎসব।
চন্দননগরে আর এক আলোর কারিগর রাজা যাদবের আলো গণেশ পুজোর আগেই পাড়ি দিয়েছে সুদূর আফ্রিকায়। জন্মাষ্টমীতে ইংল্যান্ডে দেখা গিয়েছে চন্দননগরে অলোর জাদু। কলকাতার সেন বাড়ির দুর্গাপুজো সাজবে এই শিল্পীর আলোতে। ঝাড়খণ্ডের কালীপুজোয় মণ্ডপে ঢোকার রাস্তায়, রাস্তার দু’পাশে থাকবে চন্দননগরে আলো। আলোর চাঁদোয়ার নিচ দিয়ে হেঁটেই ঢুকতে হবে মণ্ডপে।
আলোক শিল্পী পিন্টু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত দু’বছর খারাপ গিয়েছিল। কোন বায়না ছিল না। কোনও মণ্ডপেই প্রায় সেই ভাবে আলো জ্বলেনি। চন্দননগরের আলোর চাহিদা ছিল না একদমই। এ বার পরিস্থিতির বদল হয়েছে। অনেক দিন আগে থেকেই বারোয়ারি পুজোগুলো যোগাযোগ করেছে। তবে এ বারে কারিগরের অভাব রয়েছে। অনেক কারিগর ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছেন, তাই প্রয়োজন অনুযায়ী লোক পাওয়া যায়নি। দিন রাত পরিশ্রম করে আলোর কাজ তুলতে হচ্ছে। আমি মূলত যন্ত্রের কাজ করি। সেই সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।’’