চেক তুলে দিচ্ছেন সুলগ্না। ছবি: প্রকাশ পাল
সরকারি প্রকল্পে অনুদান পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর পড়াশোনা চালাতে সেই টাকার বিশেষ দরকার হবে না। তাই, পড়াশোনার কাজে ব্যয় করার জন্য ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পে পাওয়া টাকা একটি প্রতিষ্ঠানে দান করলেন চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ের এক তরুণী।
সুলগ্না চক্রবর্তী নামে ওই তরুণী কলকাতার বেথুন কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্সের ছাত্রী। তিনি ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন চুঁচুড়ার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে। সম্প্রতি ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, ওই টাকা কোনও সংস্থায় পড়াশোনার কাজে দেবেন। সেইমতো, তিনি শ্রমজীবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। ওই হাসপাতালের তরফে একটি আবাসিক স্কুল চালানো হয় ‘শ্রমজীবী পাঠশালা’ নামে। স্বাস্থ্যকর্মীর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে ওই কাজেই সুলগ্নার দেওয়া টাকা খরচ করা হবে বলে হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার জানিয়েছেন। ওই ছাত্রীর মানসিকতা দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুগ্ধ।
ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘আমি সরকারি কলেজে পড়ি। কন্যাশ্রীর অনুদানের টাকা আমার পড়াশোনার জন্য বিশেষ দরকার নেই। কিন্তু যেখানে দিলে টাকাটা অন্যদের পড়াশোনায় কাজে লাগবে, সেই রকম জায়গায় দিতে চেয়েছিলাম। আমার বাবা-মা এবং অন্য আত্মীয়দের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। ভবিষ্যতেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’
সুলগ্নার বাবা প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কর্মসূত্রে তিনি ওমানে থাকতেন। সেখানেই সুলগ্নার জন্ম। ওখানে ভারতীয় দূতাবাস পরিচালিত স্কুলে তাঁর পড়াশোনা শুরু। চুঁচুড়ায় আসেন ২০১০ সালে। প্রসেনজিৎবাবু জানান, তিনি শ্রমজীবী হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় অর্থ সাহায্য করেন। মেয়ের ইচ্ছের কথা জেনে তিনি এবং স্ত্রী মন্দাকিনী উৎসাহ দেন। চুঁচুড়ার এক প্রবীণ শিক্ষক সনৎ রায়চৌধুরীও সুলগ্নাকে এই কাজে উৎসাহ জুগিয়েছেন। অনুদানের বাকি ৫ হাজার টাকাও কোনও ভাল কাজে সুলগ্না দান করবেন বলে জানিয়েছেন।