ওই যুবক গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতীকী ছবি।
রাস্তা আটকে মদ্যপান করছিল বিয়েবাড়িতে আসা কয়েক জন। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক যুবককে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করার চেষ্টা করল মত্ত অবস্থায় থাকা ওই যুবকেরা। আর তাদের সঙ্গ দিলেন ওই বিয়েবাড়িতে আসা অন্য অতিথিরা!
রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার বেতড়ের মহেশ পাল লেনে। সমৃদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বছর ২৪-এর ওই যুবক গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত স্বরূপ হালদার নামে এক যুবককে। তবে বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। ধৃতকে মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ঠিক কী ঘটেছিল? আহত যুবকের মা মৈত্রেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রবিবার রাতে সমৃদ্ধ গিটার শিখে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে তাঁদের বাড়ির কাছেই একটি ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। ওই বিয়েবাড়ির সামনের রাস্তা জুড়ে দাঁড় করানো ছিল প্রচুর মোটরবাইক। তার উপরে বসে কয়েক জন যুবক মদ্যপান করছিল।
মৈত্রেয়ী বলেন, ‘‘ওই যুবকেরা এমন ভাবে রাস্তা আটকে বসেছিল যে, আমাদেরই প্রতিবেশী এক মহিলা তাঁর গাড়িটি গ্যারাজে ঢোকাতে পারছিলেন না। তিনি ওই যুবকদের সরে যেতে বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। উল্টে ওঁকেই গালিগালাজ করে। সেই সময়ে আমার ছেলে বাড়ি ফিরছিল। প্রতিবেশী মহিলার সঙ্গে যুবকদের ওই আচরণ দেখে সে প্রতিবাদ করে এবং তাদের বলে বাইকগুলি সরিয়ে রাখতে। তখনই ওরা লাঠি, বাঁশ, পাথর নিয়ে ছেলের উপরে চড়াও হয়।’’
মৈত্রেয়ীর অভিযোগ, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ওই বিয়েবাড়িতে উপস্থিত লোকজন বেরিয়ে আসেন। কিন্তু তাঁরা সমৃদ্ধকে বাঁচানোর বদলে উল্টে হামলাকারীদেরই সঙ্গ দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে ওরা মেরে ফেলতে চেয়েছিল। পাথর দিয়ে মাথায় থেঁতলে মারার চেষ্টা করা হয় ওকে। ছেলের মাথায় আর ঘাড়ে মারাত্মক আঘাত লেগেছে।’’
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাঁকে কলকাতায় রেলের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন পরিবারের লোকজন। চ্যাটার্জিহাট থানায় সমৃদ্ধর পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বাকি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।