কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।
জমির অভাবে বাগনান ১ ব্লকের বাঙালপুর পঞ্চায়েতে কঠিন বর্জ্যদ ব্যবস্থাপনা আদৌ বাস্তাবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে একসময়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ওই প্রকল্পের জন্য বছর খানেক আগে নিজের আট কাঠা জমি দান করেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশিক রহমান (এ বারও তিনি ওই পদে আসীন)। সেই জমিতে প্রকল্প হল। রবিবার উদ্বোধন করলেন বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন।
আশিক জানান, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে প্রকল্পটিতে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে যে শুধু দূষণ বন্ধ হবে তা-ই নয়, সার বিক্রি করে পঞ্চায়েত আয় করতে পারবে। অনেকের কর্মসংস্থান হবে। আশিকের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া জেলায় যে কোনও সরকারি প্রকল্পে জমি জোগাড় করা একটা বড় সমস্যা। নিজে উপপ্রধান হিসাবে এই প্রকল্পের জন্য জমি দিয়ে আশিক নজির তৈরি করলেন।’’
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি করে কঠিন বর্জ্যা ব্যবস্থাপনা করার পরিকল্পনা করেছে। এই প্রকল্পের শর্ত হল— জমির ব্যবস্থা করতে হবে সংস্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে। প্রকল্প গড়ার খরচ বাবদ ৪০ লক্ষ টাকা দেবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জমির অভাবেই জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েতে এই প্রকল্প গড়া হয়নি। একদিকে যেমন সরকারি খাসজমির অভাব আছে, তেমনই জমি কেনার মতো টাকাও অধিকাংশ পঞ্চায়েতের নেই।
বাঙালপুর পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, এখানেও এক লপ্তে ৮-১০ কাঠা সরকারি খাসজমি পাওয়া যায়নি। আবার পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলও জমি কেনার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। ফলে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছিল না। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন আশিক। তিনি বলেন, "আমি চেয়েছিলাম এই প্রকল্প যাতে ফিরে না যায়। সেই কারণে নিজের জমি গ্রাম পঞ্চায়েতের নামে দানপত্র করে দিই। তারপরেই শুরু হয়ে যায়
প্রকল্পের কাজ।"
প্রকল্পটি হয়েছে দামোদরের ধারে বাড় ভগবতীপুর মৌজায়। নদীদূষণ রোধ করতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে জেলা প্রশাসন কর্তারা জানান। এই প্রকল্পে পঞ্চায়েতের ২৯টি সংসদ এলাকা থেকে বর্জ্য তুলে আনা হবে। সেগুলি প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে সার তৈরি হবে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে।