উদ্বোধন হল স্মার্টক্লাসের। —নিজস্ব চিত্র।
এতদিন হাওড়া জেলার একমাত্র বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের আবাসিক স্কুলে কোনও ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’ ছিল না। লিলুয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক অরিজিৎ সরকারের আর্থিক সাহায্যে উলুবেড়িয়ার ‘আনন্দ ভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুল’ নামে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ বার ‘স্মার্ট ক্লাসরুম’ হল। যা পড়ুয়াদের বিশেষ সহায়ক হবে বলে মনে করছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
রবিবার স্কুলে এসে ওই আধুনিক ক্লাসরুমের উদ্বোধন করেন অরিজিৎ। উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় খাঁড়া, উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান প্রমুখ। অরিজিৎ বলেন, ‘‘এই প্রযুক্তির যুগে মানুষকে এগিয়ে যেতে হবে। তার জন্য দরকার ডিজ়িটাল মাধ্যম। প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদেরও বর্তমান যুগে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ডিজ়িটাল মাধ্যমে পড়াশোনা করতে হবে। তাই তাদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’’
স্কুলে ৫০ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও ৩০ জন দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী পড়ুয়া রয়েছে। ‘ব্রেল’ পদ্ধতিতে তারা এতদিন পড়াশোনা করছিল। প্রধান শিক্ষক অজয় দাস জানান, পড়ুয়াদের পাঠদানকে কী করে আরও আকর্ষক করা যায়, কী ভাবে আরও উন্নত মানের শিক্ষাদান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছিলই। স্মার্ট’ ক্লাসের মাধ্যমে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান করা সম্ভব হলেও এতদিন অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে রূপায়ণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সম্প্রতি ওই স্কুলটি দেখতে এসেছিলেন অরিজিৎ। তাঁর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি এগিয়ে আসেন। প্রায় এক লক্ষ টাকা দেন।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘রাজ্যে মোট ৮৪টি সরকার পোষিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বিদ্যালয় রয়েছে। এই প্রথম স্মার্ট ক্লাস এমন কোনও স্কুলে চালু হল।’’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্মার্ট ক্লাসরুমে অডিয়ো-ভিজ়ুয়াল পদ্ধতির মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের একসঙ্গে বসিয়ে ক্লাস নেওয়া সম্ভব। শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা যেমন চোখের সামনে সব জিনিস দেখতে পাবে, তেমনই দৃষ্টিহীনরা সেই সব জিনিসের শব্দ শুনতে পাবে।