আবাস যোজনা কে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ। — ফাইল চিত্র।
প্রথম পর্যায়ে হাওড়ায় যে সব উপভোক্তা আবাস প্লাসের টাকা পেতে চলেছেন, তার তালিকা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে জেলা প্রশাসন। শীঘ্রই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসবে বলে প্রশাসন সূ্ত্রের খবর। এ হেন পরিস্থিতিতে শ্যামপুরের তৃণমূল বিধায়ক কালীপদ মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর কেন্দ্রে চূড়ান্ত তালিকাতেও বেশ কিছু গরমিল আছে। এ জন্য তিনি দায়ী করেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশকে।
আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে রাজ্যের অন্যান্য অংশের সঙ্গে শ্যামপুরেও শুরু হচ্ছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি। শনিবার তা নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকেই ওই অভিযোগ তোলেন বিধায়ক। তাঁর দাবি, ‘‘আবাস প্লাস নিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে, এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ। প্রশাসনিক আধিকারিকদের একটা অংশ ইচ্ছা করেই সরকারের বদনাম করতে এইসব অপকর্ম করেছেন। সাফ বলছি, এইসব অপকর্মের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
একই সঙ্গে বিধায়কের আশঙ্কা, দলের নয়া কর্মসূচিতে ‘মমতার দূত’ হয়ে যাঁরা গ্রামবাসীদের কাছে গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুফল পাওয়া নিয়ে খোঁজখবর নেবেন, তাঁদের আবাস প্লাস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। যা ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। তবে, চূড়ান্ত তালিকায় কোনও রকম গরমিলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।
বিধায়কের দাবি, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে যাঁদের তিনতলা পাকা বাড়ি আছে, তাঁদের নামও চূড়ান্ত তালিকায়থেকে গিয়েছিল। আমরা বিষয়টি জানতে পারার পরে সেই সব নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আবার উল্টো উদাহরণওআছে। যে গরিব মানুষের পাঁচ শতক জমি আছে, কিন্তু পাকা বাড়ি নেই, তাঁর নাম বাদ পড়ে। আমরা এটাও সংশোধন করতে বলি। কিন্তুজানতে না-পারায় সব গরমিল দূর করতে পারিনি।’’
সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য ‘মমতার দূত’দের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের জনমুখী প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষকে কী বলতে হবে সেটাও যেমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তেমনই আবাস প্লাস নিয়েওকোনও অপ্রীতিকর প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়ার বিষয়টিও কর্মশালায় বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’’
বিধায়কের অভিযোগকে কটাক্ষ করেছেন বিরেোধীরা। শ্যামপুরের বিজেপি নেতা কৌশিক চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কারও নাম বাদ দেওয়া বা রাখা— সবটাই তৃণমূল নেতারা প্রশাসনকে দিয়ে করিয়ে নেন। এখন সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য প্রশাসনের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন।’’ একই বক্তব্য কংগ্রেস নেতা আতিয়ার খানেরও।
বিধায়কের ওই সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ নদেবাসী জানা, কর্মাধ্যক্ষ শ্রীধর মণ্ডল, শ্যামপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রশান্ত মণ্ডল, শ্যামপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুলফিকার মোল্লা প্রমুখ। একই কর্মসূচি নিয়ে আমতার বিধায়কসুকান্ত পালও এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করেন।