শেওড়াফুলি এবং তারকেশ্বর স্টেশন মডেল স্টেশন। —প্রতীকী চিত্র।
নতুন রূপে সাজবে শেওড়াফুলি ও তারকেশ্বর স্টেশন। ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পে রবিবার এই নয়া সজ্জার শিলান্যাস ভার্চুয়ালি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠান বড় পর্দায় দেখানো হল দুই স্টেশনেই।
শেওড়াফুলিতে তিন ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাসের পরে রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা দুই স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী মাধুরীরানি কর্মকার ও বিন্দুরানি সাহা এবং এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর কন্যা শিবানী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে স্টেশনে ভিত্তিপ্রস্তরের আবরণ উন্মোচন করেন। তাঁদের সম্মানিত করা হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যের ৫০৮টি স্টেশন এই প্রকল্পে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যে ৩৭টি স্টেশন রয়েছে। হুগলিতে শেওড়াফুলি, তারকেশ্বর বাদেও ডানকুনি ও চন্দননগরের নাম রয়েছে। শেওড়াফুলির স্টেশন প্রবন্ধক রাম আধার প্রসাদ জানান, হাওড়া ডিভিশনের ন’টি স্টেশনের শিলান্যাস হয় রবিবার। শেওড়াফুলি ও তারকেশ্বরে যথাক্রমে ৩১.১ কোটি এবং ২৪.৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘যাত্রীদের জন্য আধুনিক পরিষেবার ব্যবস্থা হবে। ১২ মিটার চওড়া একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করা হবে। লিফট, চলমান সিঁড়ি থাকবে। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’’
শেওড়াফুলি জংশন স্টেশন। হাওড়া থেকে বর্ধমান মেন, ব্যান্ডেল, কাটোয়া, তারকেশ্বর শাখা শেওড়াফুলির সঙ্গে যুক্ত। স্টেশনের পাশেই হাট বসে। পাশেই গঙ্গায় ফেরিঘাট। ও পাড়ে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর। স্টেশনের অন্যঅংশের পাশে জিটি রোড। এই স্টেশন সদা ব্যস্ত।
তারকেশ্বরে মণ্ডপ হয়েছিল স্টেশনের পাশে। শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে সারা বছর পুণ্যার্থীদের আনাগোনা লেগে থাকে। শ্রাবণ ও চৈত্রে ঠাসা ভিড় হয়। অসংখ্য পুণ্যার্থী যাতায়াত করেন ট্রেনে। নিত্যযাত্রী তো আছেনই। এই স্টেশনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ঢেলে সাজার দাবি ছিলই। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে উন্নত মানের শৌচালয়, গাড়ি রাখার জায়গা, ফুড প্লাজ়া, উন্নতমানের যাত্রী প্রতীক্ষালয় হবে। চওড়া করা হবে স্টেশন সংলগ্ন রাস্তা। ওয়াই ফাই মিলবে বিনামূল্যে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। রেলের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য স্বপনপাল বলেন, ‘‘আগামী দিনে বহু স্টেশনেরই খোলনলচে এ ভাবেবদলে যাবে।’’
নিত্যযাত্রী সংগঠন তারকেশ্বর লাইন প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হরদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তারকেশ্বরে ট্রেন চলছে ১৩৭ বছর। রেল এত গুরুত্ব দিয়েছে এই স্টেশনকে, খুব ভাল লাগছে। তবে, এতটা না হলেও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের যথাযথ ব্যবস্থা সব জায়গাতেইথাকা দরকার।’’
তারকেশ্বর স্টেশনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর দাবিতে নাগরিক সংগঠন অল বেঙ্গল সিটিজেন্স ফোরাম ইতিপূর্বে একাধিক বার রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছে। সংগঠনের সভাপতি শৈলেন পর্বতের বক্তব্য, তাতে কিছু কাজ হলেও, সব হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘তারকেশ্বর, শেওড়াফুলি দুই স্টেশনেরই প্রচুর গুরুত্ব। পরিষেবা যত আধুনিক হবে, ততই ভাল। তবে, তারকেশ্বর শাখায় অফিসের ব্যস্ত সময়ে ট্রেন যাতে পর্যাপ্ত চলে, সেটা দেখা দরকার।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কয়েকটি স্টেশন ভাল করা হচ্ছে বলে, অন্যগুলি দুয়োরানি যেন না হয়। অনেক স্টেশনেই কর্মীর ঘাটতি। তাতে পরিষেবায় সমস্যা হয়। নিয়োগ হোক।’’