অব্যবস্থা। খানাকুলের বন্দাইপুর ৩১৮ নং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
গোয়াল ঘরের দাওয়া জলে ভিজে। খানাকুলের বন্দাইপুর ৩১৮ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলে এখানে। কর্মীদের অভিযোগ, বর্ষায় ঘরময় জল পড়ে। ছাতা আড়াল দিয়ে রান্না হয়। কেঁচোতে ছয়লাপ থাকে ঘর।
গোঘাটে বালি মালাকারপাড়ার ১৪৮ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি আবার পরিত্যক্ত জায়গায় বাঁশ পুঁতে, তার উপরে ত্রিপল টাঙিয়ে কোনওরকমে চলছে।
গোঘাটেরই মথুরা পূর্বপাড়া ১৮১ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি গত ২৪ বছর ধরে বারবার উৎখাত হয়েছে। এখন তার ঠাঁই হয়েছে গ্রামের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রর গায়ের একটি পরিত্যক্ত ঘরে।
আরামবাগের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর কেন্দ্র-সহ জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বেশ কিছু চলছে গ্রামের মন্দির চাতাল, ক্লাব বা স্কুলের দাওয়া দখল করে। এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির অনেকগুলিতে আবার পাশাপাশি শৌচাগারও নেই।
আরামবাগ মহকুমা জুড়ে এমনই দৈন্যদশা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির। প্রশাসন স্বীকার করেছে, জেলার অর্ধেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই গৃহহীন। নিজস্ব ঘর না থাকা কেন্দ্রগুলি অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেই চালাতে হচ্ছে বলে দাবি বিভিন্ন ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ আধিকারিক তথা সিডিপিওদের।
জেলার নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজ কল্যাণ দফতরের প্রকল্প আধিকারিক প্রান্তিক ঘোষ বলেন, “জেলার ১৮টি ব্লকে মোট ৬ হাজার ৭০৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে এখনও পর্যন্ত নিজস্ব ঘর হয়েছে ৩ হাজার ৪৬৬টির। তবে আরও ২০৫টি কেন্দ্রের নির্মাণ চলছে। বাকিগুলির দফায় দফায় হবে।”
জেলার নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজ কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজস্ব ঘর না থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির জন্য জায়গার ব্যবস্থা করতে বছর তিন ধরে খাস জায়গা খোঁজা বা জায়গা দানের জন্য বিভিন্ন মানুষকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাতে সাফল্যও মিলছে।
গত ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিজস্ব ভবন ছিল ২ হাজার ৬২৮টি। পঞ্চায়েতের খুঁজে দেওয়া কিছু খাস জায়গা বাদে সবই প্রায় গ্রামীবাসীদের দানের। অথবা স্কুল বা ক্লাব কর্তৃপক্ষের দান। যেখানে জায়গা মিলছে সেগুলির অধিকাংশই গ্রামীণ পরিকাঠামো বা আদিবাসী কল্যাণ সংক্রান্ত তহবিলে কাজ চলছে। আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত পারআদ্রা গ্রামের জমিদানকারী পরিবারের পক্ষে মির সরফরাজ বলেন, “আমাদের শেষ যাত্রায় জায়গা লাগবে তো সাড়ে তিন হাত করে। মনের তাগিদ থেকেই ৩ শতক জায়গা দানপত্র করেছি। কেন্দ্রও হয়েছে।’’