মেরামত চলছে মঞ্চের। নিজস্ব চিত্র
এক বছর আগে মাথার উপর থেকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল অ্যাসবেসটস। জখম হন নাটকের এক অভিনেতা। এ বার পায়ের নীচে ভাঙা পাটাতনে আহত হলেন এক অভিনেতা। শ্রীরামপুর রবীন্দ্রভবনের মঞ্চ কতটা মজবুত, এই উদাহরণই যথেষ্ট। আমূল সংস্কারের দিশা নেই।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া হয়েছে শহরের সাংস্কৃতিক মহলে। ফের দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতে হবে কি না, সেই আশঙ্কায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা। ভবনটি অবিলম্বে সংস্কারের দাবিতে পুরপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেছেন সাংস্কৃতিক মঞ্চের কর্মীরা। দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপি। ঘটনাচক্রে দু’বারই দুর্ঘটনা ঘটে শহরের একটি নাট্যদলের মহলায়।
পুরসভা এবং সাংস্কৃতিক শিবিরের খবর, গত মঙ্গলবার মহলা চলাকালীন মঞ্চের ভাঙা পাটাতনে বিভাস গুপ্ত নামে এক অভিনেতার পায়ে চোট লাগে। শ্রীরামপুরের সাংস্কৃতিক কর্মীদের মঞ্চ ‘সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের’ এক প্রতিনিধি দল বুধবার পুরপ্রধান গিরিধারী সাহাকে স্মারকলিপি দেন। মঞ্চের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা ওই দিনই মেরামত করে দেওয়া হয় বলে পুরপ্রধান জানান।
কলকাতার কাছে, হুগলির মহকুমা শহর শ্রীরামপুরে সংস্কৃতি চর্চার আধুনিক ভবন নেই। বরং, সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র উঠে গিয়ে নামী সংস্থার ঝাঁ চকচকে শপিং মল হয়েছে। কী শর্তে, কার ভালর জন্য তা হয়েছে, শহরবাসী জানেন না। সে দিক থেকে শহরের ‘নিয়ন্ত্রক’দের কাছে সংস্কৃতি চর্চার বিষয়টি কতটা গুরুত্বের, সেই প্রশ্ন ফিরে ফিরে আসে। শহরের একটি বড় অংশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা চান, অন্যত্র আধুনিক মানের একটি ভবন করা হোক।
মঞ্চের অভিযোগ, রবীন্দ্রভবনের দুরবস্থা নিয়ে বহুবার পুর-প্রশাসনের সঙ্গে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, পরিস্থিতি বদলায়নি। ন্যূনতম দেখভাল বা পরিচর্যা হয় না। এই শহরে রবীন্দ্রভবন তৈরি হয় ষাটের দশকে। বছর কয়েক আগে বাতানুকূল যন্ত্র বসানো হলেও অন্যান্য পরিকাঠামো মান্ধাতা আমলের। রবীন্দ্রভবন সংস্কার নিয়ে ২০১৯ সালে রাজ্য সরকারের কাছে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এখনও মেলেনি। ভবনের হাল নিয়ে এক সাংস্কৃতিক কর্মীর প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি মর্মান্তিক পরিণতির জন্য অপেক্ষা করছি?’’
গিরিধারীবাবু পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেছেন কয়েক মাস আগে। তাঁর দাবি, ওই ভবন পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে পুরসভার পাঠানো প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দফতরে তিনি কথা বলেছেন। প্রস্তাব নিয়ে কিছু বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই জবাবও পুরসভার তরফে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এগোচ্ছে।