শ্রীরামপুর পুরসভার উদ্যোগ ঘিরে প্রশ্নও
Dustbin

Serampore Municipality: বর্জ্য পৃথক করতে ফের বাড়ি বাড়ি বালতি বিলি

খামতি স্বীকার করে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে এই কাজ করতে সার্বিক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৯:০৬
Share:

চলছে বালতি বিলি। নিজস্ব চিত্র।

আধুনিক উপায়ে জঞ্জাল অপসারণের সুবিধার জন্য ফের পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি নীল-সবুজ বালতি বিলি শুরু হয়েছে শ্রীরামপুরে। যাতে, পচনশীল (সবুজ বালতিতে) এবং অপচনশীল আবর্জনা (নীল বালতিতে) আলাদা করে রাখেন নাগরিকরা। কয়েক বছর আগেও এই উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ফলে, ফের একই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

নাগরিকদের বড় অংশের সচেতনতার অভাব রয়েছে। ফলে, এ বারও অনেকেই বালতি তুলে রেখেছেন। কেউ ঘরকন্নার কাজে ব্যবহার করছেন। আগের বারের ব্যর্থতার পরেও এ বার এখনও পুরসভার তরফে সচেতনতার প্রচার নেই। ফলে, এ বারও উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে, সেই সংশয় থেকে যাচ্ছে।

খামতি স্বীকার করে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে এই কাজ করতে সার্বিক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রতি পুরসভায় দু’টি ওয়ার্ডকে মডেল করে এই কাজের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। শ্রীরামপুরে ৭, ৮ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডে এই কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ৫০% এবং আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডে আবর্জনা পৃথক করে সংগ্রহের কাজ শুরু করতে হবে।

Advertisement

পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌরমোহন দে বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই তিনটি ওয়ার্ডে বাসিন্দারা আবর্জনা পৃথক করে সাফাইকর্মীদের হাতগাড়িতে দিচ্ছেন। হোটেল-রেস্তরাঁও তাই করছে। জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক ওয়ার্ডে এই নিয়ম চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি নজরদারিও চলবে।’’

আগে পাড়়ায় পাড়ায় ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেলা হত। সাফাইকর্মীরা তা নিয়ে গিয়ে ভাগাড়ে ফেলতেন। এখম ছ’টি পুরসভা (উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী ও চাঁপদানি) মিলিয়ে কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্প হয়েছে। পচনশীল আবর্জনা থেকে নিজেদের শহরে বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্পে তারা সার তৈরি করে। অপচনশীল আবর্জনা বৈদ্যবাটীর দীর্ঘাঙ্গির প্রকল্পে ফেলা হয়। সাফাইকর্মীরা বাঁশি বাজিয়ে হাতগাড়ি নিয়ে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ করেন। সব জঞ্জাল একত্রিত করে ফেলায় পচনশীল এবং অপচনশীল আলাদা করতে হয়। বিপুল পরিমাণ আবর্জনা থেকে তা ভাল ভাবে করা যায় না। এই সমস্যা সমাধানে বাড়িতেই পচনশীল এবং অপচনশীল আবর্জনা আলাদা করে রাখতে রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থার (সুডা) তরফে ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে দু’টি বালতি দেওয়া হচ্ছে।

শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, পুরসভা বালতি দিয়েই খালাস। সবাই তা ওই কাজে লাগাচ্ছে কি না, দেখায় দায় নেই। ফ্ল্যাটবাসীর একাংশ সাফাইকর্মীদের হাতগাড়িতে আবর্জনা ফেলার ধার ধারেন না। ডাস্টবিনই তাঁদের পছন্দ। ডাস্টবিন উপচে আবর্জনা রাস্তায় ছড়ায়। কখনও গরু-কুকুর জঞ্জাল ছড়িয়ে পাড়াময় করে। পুরকর্তারা এ নিয়ে চুপ। তা ছাড়া, জিটি রোডের ধার-সহ কিছু জায়গায় আবর্জনা ডাঁই হয়ে থাকে।

পুরসভার খবর, এ শহরে বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। জনসংখ্যা দু’লক্ষের কাছাকাছি। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বা বাজার থেকে আবর্জনা সংগ্রহের পরে জিটি রোডের ধারে নির্দিষ্ট জায়গায় (সেকেন্ডারি কালেকশন পয়েন্ট) রাখা হয়। সেখান থেকে বড় গাড়িতে তুলে প্লান্টে পাঠানো হয়। সমস্যা হল, ‘সেকেন্ডারি কালেকশন পয়েন্ট’গুলিতে জঞ্জাল উপচে পড়ে। রাস্তায় জঞ্জাল চলে আসায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। দৃশ্যদূষণও হয়।

পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর অনুজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেকেন্ডারি কালেকশন সেন্টার থেকে প্রতিদিনই গাড়ি করে আবর্জনা সরিয়ে প্লান্টে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, আবর্জনা যাতে মিশে না যায়, সে জন্য সেখানে গাড়ি রাখা থাকবে। গাড়ি ভরে গেলে আবর্জনা প্লান্টে রেখে আসা হবে। পথের ধারে জঞ্জাল জমার সমস্যাও থাকবে না।’’ গৌরমোহনবাবু জানান, অনেক আবাসনে বড় বিন দেওয়া হয়েছে। সব আবাসনেই দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement