ইউক্রেনে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি হয়ে তাঁদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কবে? যুদ্ধ বিধ্বস্ত টারনোপিল শহরে বসে এখন তারই অপেক্ষায় শ্রীতমারা।
নিজস্ব চিত্র।
২৬ ফেব্রুয়ারির অপেক্ষায় দিন গুনছিল রিষড়ার শ্রীতমা। ইউক্রেনের টারনোপিল স্টেট মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া তিনি। কিন্তু আচমকাই বদলে গেল পরিস্থিতি। রাশিয়া হামলা চালাল ইউক্রেনে। তার পর থেকেই চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে ডাক্তারি পড়ুয়া শ্রীতমার। একই অবস্থা তাঁর অন্য ভারতীয় সতীর্থদেরও। সাইরেন বাজলেই বাঙ্কারে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। মাথার উপর চক্কর কাটছে যুদ্ধ বিমান।
ইউক্রেনের ‘টারনোপিল স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি’র পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী শ্রীতমা মৌলিক। আদত বাড়ি হুগলির রিষড়ার নতুন গ্রামে। বাবা প্রশান্ত এবং মা বিজলী মৌলিকের মেয়ের জন্য চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ শহর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে, পশ্চিম ইউক্রেনের টারনোপিল শহরে রয়েছেন শ্রীতমা। সেখান থেকেই ভিডিও কলে শ্রীতমা জানান, প্রবল উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটছে তাঁদের।
২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। প্লেনের টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল, তার মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। ফলে বিমান চলাচল বন্ধ। শ্রীতমার বাবা প্রশান্ত বলেন, ‘‘প্রাণহানির দুশ্চিন্তার থেকেও এখন বড় চিন্তা হল খাদ্য সঙ্কট। ক্রমশ খাদ্য ফুরিয়ে আসছে। জানি না এর পর কী হবে!’’ মা বলেন, ‘‘এখনও ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। খোঁজ নিতে পারছি মেয়ের। ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে বা ফোন বন্ধ করে দিলে কী হবে! কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন। ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান সবিস্তারে। ইউক্রেনে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি হয়ে তাঁদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কবে? যুদ্ধ বিধ্বস্ত টারনোপিল শহরে বসে এখন তারই অপেক্ষায় শ্রীতমারা।