বলাগড়ে টিকে থাকা একটি মাত্র টালি কারখানায় কাজ করছেন এক শ্রমিক। — নিজস্ব চিত্র।
হারিয়ে যাচ্ছে বলাগড়ের টালি শিল্প। এককালে শতাধিক টালি কারখানায় রমরমিয়ে চলত ব্যবসা। ক্রমশ চাহিদা কমায় আজ মাত্র একটি টিমটিম করে বেঁচে আছে। ২০০০ সালেও কুড়ি-পঁচিশটি কারখানা বেঁচে ছিল। গত বাইশ বছরে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে মাত্র এক! বন্ধ কারখানাগুলির বেকার হয়ে যাওয়া কয়েক হাজার শ্রমিক অন্যত্র কর্মসংস্থান জোগাড় করে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ঘর ছাইবার টালি ছিল নানা রকম। মটকা, মোটা, সরু, চওড়া, লম্বা, টেরাকোটা, চওড়া, লম্বা টালি। এখন সেই রকমারি টালির মধ্যে কেবল লম্বা ও মটকা টালি পাওয়া যায়। টালি কারখানার মালিক দেবাশিস নন্দীর দাবি, “আশির দশকে শতাধিক কারখানায় নোনা ধরে না এমন মাটি দিয়ে তৈরি করা হত উন্নত মানের টালি। দেশের বাজারে এর চাহিদা ছিল প্রচুর। মাসে ২৫-৩০ হাজার টালি যেত ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। তবে এখন সে সব অতীত। বর্তমানে টালি রফতানি কমে দাঁড়িয়েছে ১৫-২০ হাজারে। যা মূলত যায় ঝাড়খণ্ডে।”
ইদানীং টালির বাজার দখল করেছে অ্যাসবেস্টস, টিন। কাঠ-কয়লা-মাটি সহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়লেও টালির দাম বিশেষ বাড়েনি। আগে যেটা বিক্রি হত ৫ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। চাহিদার অভাবে এই একটি মাত্র টালি কারখানার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাও দায় হয়ে গিয়েছে। কারখানার মালিকের দাবি, সরকারি উদ্যোগ ছাড়া এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন।
বিডিও (বলাগড়) নীলাদ্রি সরকার বলেন, “নভেম্বর থেকে তো ভাটার মালিকরা মাটি রয়্যালটি দিয়ে কিনছেন। মাটি তো পাচ্ছেন। তাঁদের যদি রয়্যালটিতে ছাড়ের অনুরোধ থাকে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।”