টোটো করে পানীয় জল বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করছেন। নিজস্ব চিত্র।
গরম পড়তেই জলের সঙ্কট নানা এলাকায়। তেষ্টা মেটাতে কেনা জলের উপরে নির্ভরতা বাড়ছে হুগলির গ্রামীণ এলাকাতেও। পান্ডুয়া ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ছে এমন ছবি। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, চাহিদা বাড়তেই জারবন্দি ওই জলের দামও অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন কারবারিরা। ফলে, জলের খরচ বেড়েছে গেরস্থের।
জানা গিয়েছে, এই ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং সজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। গরমের দাপটের পাশাপাশি রমজান মাস চলার কারণেও পানীয় জলের চাহিদা বেশি। অভিযোগ, পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের বেনেপাড়া, স্টেশন রোড, বালিহাটা প্রভৃতি এলাকায় বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ থেকেও লাভ হয় না। কেননা, ট্যাপকল থেকে জল পড়ে সরু সুতোর মতো। এক বালতি জল ভরতে দীর্ঘ সময় গড়িয়ে যায়।
পান্ডুয়া স্টেশন বাজার এলাকার বাসিন্দা সৌমিত্র পাল বলেন, ‘‘গরমের সময় স্বাভাবিক কারণেই পানীয় জল বেশি লাগে। কিন্তু আমাদের এলাকায় বাড়িতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ট্যাপকল থাকলেও জল পড়ে সুতোর মতো। মাঝেমধ্যেই ঘোলাটে জল পড়ে। বাধ্য হয়ে জল কিনে খাই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘হঠাৎ করে জলের দাম অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। আগে ২০ লিটার জলের দাম ছিল ২০ টাকা। এখন ১৫ টাকা বাড়িয়ে ওই পরিমাণ জলের দাম নিচ্ছে ৩৫ টাকা। একটাই সুবিধা, বাড়িতে এসে জল পৌঁছে দিয়ে যান কারবারি।’’
গত বছরেও পান্ডুয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। এ নিয়ে গ্রামে ক্ষোভ-বিক্ষোভও ছিল। পরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে জলের বেশ কয়েকটি পাম্প বসানো হয়। তাতেও সমস্যা মেটেনি।
শঙ্কর দে নামে এক জল-ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ২০ লিটার জল ২০ টাকা দরে বেচেছি। টোটো ভাড়া করে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিই। সব হিসাব করেই দাম ১৫ টাকা বাড়াতে হয়েছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘আগে দিনেগোটা চল্লিশ বাড়িতে জল দিতাম। গত কয়েক দিনে সেই সংখ্যা ৬০-৭৫ হয়েছে। কেউ বরাত দিলে প্রচণ্ড রোদের মধ্যেও আমরা বাড়িতে গিয়ে জল দিয়ে আসি।’’
কারিগরি জনস্বাস্থ্য দফতরের হুগলির এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ রয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু বাড়িতে পাম্প চালিয়ে বেশি করে জল তুলে নেওয়া হয়।সেই কারণে অন্যান্য বাড়িতে অত্যন্ত সরু হয়ে জল পড়ে। আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। এ ছাড়াও গরমেরসময়ে জলের চাহিদা বেশি তো থাকেই। সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা।’’