অবরোধের জেরে চন্দননগর স্টেশনে আটকে ট্রেন। —নিজস্ব চিত্র।
রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)-র বিরুদ্ধে মারধর এবং জুলুমবাজির অভিযোগ তুলে হুগলি স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করলেন হকারেরা। শনিবার সন্ধ্যার এই অবরোধের জেরে হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখায় ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। চন্দননগর, বৈদ্যবাটি পর পর স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায় একের পর এক আপ বর্ধমান এবং ব্যান্ডেল লোকাল। প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে রাত ৯টা ৫ মিনিটে অবরোধ ওঠে। ট্রেনের চাকা গড়ালেও রেল পরিষেবা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
হকারদের অবরোধের ফলে সপ্তাহের শেষ দিনে দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় অফিসফেরত নিত্যযাত্রীদের। অবরোধ তুলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রেল পুলিশের একটি দল। তারা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়় ছিলেন অবরোধকারীরা। এক অবরোধকারী বলেন, “আরপিএফ আমাদের স্টল ভেঙে দিচ্ছে, অন্যায্য জরিমানা নিচ্ছে। আমরা বেকার ছেলে। হকারি করে খাই। পেটে টান পড়লে দেখবে কে?”
এই প্রসঙ্গে রেল জানায়, হকারদের অবরোধের জেরে তিনটে লাইনই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে আপ লাইনকে সচল করা হয়। ধীরে ধীরে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে রেলের তরফে। আপাতত আপ এবং ডাউন— দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনে। আরপিএফের বিরুদ্ধে হকার-উচ্ছেদ চালানোর অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল জাতীয় বাংলা সম্মেলন বলে একটি সংগঠন। শনিবার বিকেলে হাওড়া স্টেশনের ওল্ড কমপ্লেক্সে রেল হকারেরা আসতেই আরপিএফের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ করার অভিযোগ ওঠে। দীপক দাস নামের এক হকার জানান, হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নামামাত্রই আরপিএফ তাঁদের উপর চড়াও হয়। বেধড়ক মারধর করে।
পরে এই হকারেরা রেলের ডিআরএম অফিসের সামনে ধর্না দিতে বসে পড়েন। সেখানে রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ, সেখানেও লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমকে ছবি তুলতে বাধা দেয় আরপিএফ। এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, যাঁরা আন্দোলন করতে হাওড়ায় এসেছিলেন, তাঁদের হকারির বৈধ কোনও কাগজপত্র নেই। লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করে ওই আধিকারিক জানান, বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে মারধর করা হয়নি। তবে এই ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার রাতে হুগলিতে এই ঘটনার প্রতিবাদেই অবরোধ করেন হকারেরা।