—প্রতীকী চিত্র।
২০২১ সালে রাজ্যের অন্য অংশের সঙ্গে হাওড়া জেলাতেও আছড়ে পড়েছিল ইয়াস। তার জেরে জেলার বিভিন্ন অংশে নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই বছরে আবার জেলায় বন্যাও
হয়। দু’টি বিপর্যয়ের পরেই ঠিকা সংস্থাগুলি জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত করে। কিন্তু তারপরে কেটে গিয়েছে দু’বছরেরও বেশি। ঠিকা সংস্থাগুলি এই কাজ বাবদ একটি পয়সাও
পায়নি বলে অভিযোগ। জেলায় এ বাবদ মোট বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
বছরের পর বছর কাজ করেও টাকা না পেয়ে অনেক ছোট ঠিকা সংস্থা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। বড় সংস্থাগুলি টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। টাকার সমস্যা এতটাই প্রকট যে, হাওড়া জেলায় বছরখানেক আগে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম (আরআইডিএফ) এর টাকায় একটি বাঁধ মেরামতির কাজের জন্য সেচ দফতর যখন দরপত্র আহ্বান করে, তখন ঠিকা সংস্থাদের একটা বড় অংশ তাতে যোগ দিতে অস্বীকার করে। পরে অবশ্য সেচ দফতরের কর্তারা ঠিকা সংস্থাগুলিকে বোঝালে সমস্যা মেটে।
হাওড়ার বহু জায়গায় নদীবাঁধের অবস্থা খারাপ। উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর ও বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর বাঁধ, শ্যামপুরের গাদিয়াড়ায় হুগলি নদীর বাঁধ, শ্যামপুরেরই বিভিন্ন জায়গায় রূপনারায়ণের বাঁধ বেহাল। মাটির বস্তা ফেলে কোনওমতে সেগুলি রক্ষা করা হচ্ছে। ভাঙন পাকাপাকি ভাবে রুখতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশ স্বীকার করেছেন, টাকার সমস্যার জন্যই পাকাপাকি ভাবে বাঁধ মেরামতি করা যাচ্ছে না। রাজ্য সেচ দফতরের এক কর্তা জানান, ঠিকা সংস্থাগুলির পাওনা মেটানো থাকলে তাদের দিয়ে হয় তো বাঁধ সংস্কারের অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু বকেয়া না মেটায় সিংহভাগ ঠিকা সংস্থা কাজ করতেই চাইছে না।
গত সোমবার হাওড়ার শরৎ সদনে বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় নিবন্ধীকৃত ঠিকা সংস্থাগুলির রাজ্য সম্মেলনে উঠেছিল এই বকেয়া-প্রসঙ্গ। তা কেন মেটানো হচ্ছে না, ওঠে সেই
প্রশ্নও। সেচ দফতর সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, ইয়াস এবং বন্যায় কাজ করা ঠিকা সংস্থাগুলির বকেয়া টাকার বিল অর্থ দফতরে আটকে আছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই টাকা দিয়ে হবে।