n ব্যস্ত: ক্রেতাদের ভিড় উলুবেড়িয়া। ছবি: সুব্রত জানা ও সঞ্জীব ঘোষ
পুজোর বাকি আর দিন পনেরো। আশ্বিনের আকাশে রোদ-বৃষ্টির খেলা চলছে। গত রবিবার বৃষ্টি ভাসিয়েছিল পুজোর বাজার। তবে এই রবিবার আকাশ ছিল পরিষ্কার। বিকেল গড়াতেই দুই জেলার বড় বাজারগুলিতে উপচে পড়ল ক্রেতাদের ভিড়। খুশি ব্যবসায়ীরা।
করোনা পরিস্থিতির জেরে গত দু’বছর ব্যবসা তেমন জমেনি। এ বার করোনা-ভীতি উধাও। ফলে, পুরনো মেজাজে ফিরেছে পুজোর বাজার। শনিবার, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বিকেল থেকেই শ্রীরামপুরে জামাকাপড়, জুতোর দোকানে ভিড় বেড়েছে। রবিবার বিকেলে শ্রীরামপুর স্টেশন লাগোয়া রাজেন্দ্রবাগ রোড, নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউ, বিপি দে স্ট্রিটে পা ফেলার জায়গা ছিল না। শপিং মলে ভিড় জমেছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়টার দিকে তাঁরা তাকিয়ে থাকেন। গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতির পর এ বার খরা কেটেছে।
গ্রামে একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় এ বার পুজোর বাজার জমবে না বলে আশঙ্কা ছিল আরামবাগের ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সেই আশঙ্কা অমূলক দাবি করে ব্যবসায়ীরা জানান, জামাকাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। শহরের পিসি সেন রোডের অন্যতম বড় কাপড় ব্যবসায়ী শক্তিসাধন গুপ্ত বলেন, “প্রতিদিন গড়ে আড়াই লক্ষ টাকার বিক্রি হচ্ছে। রবিবার বিক্রি বেড়েছে।’’ তুলনামূলক ছোট বস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন নবকুমার মণ্ডল বলেন, “গত রবিবার পর্যন্ত প্রতিদন গড়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে।’’
তবে জুতো, মোবাইল ফোন, ইমিটেশন বা সেলুনগুলিতে ভিড় এখনও তেমন জমেনি। শহরের প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবসায়ী শঙ্কর মণ্ডল, জুতো ব্যবসায়ী আকাশ চৌধুরীরা জানান, আগের বারের থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০ শতাংশ বিক্রি কম। তবে পুজের মুখে বিক্রি বাড়ার আশায় রয়েছেন তাঁরা।
হাওড়ারও পুজোবাজার জমজামাট। বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা সর্বত্র সন্ধ্যায় দোকানে উপচে পড়েছিল ক্রেতাদের ভিড়। বাগনান এবং উলুবেড়িয়া বাজারে ভিড়ের দাপটে রাস্তায় যানজট হয়ে গিয়েছিল। উলুবেড়িয়ার একটি কাপড়ের দোকানের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত দু’বছর করোনা আর বন্যা পরিস্থিতিতে ব্যবসা করতে পারিনি। এ বছর পরিস্থিতি অনেকটা ভাল।’’ বাগনানের একটি কাপড়ের দোকানের মালিক গৌতম বসু বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই খদ্দের বাড়ছে। এ বছর ব্যবসা না জমলে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতাম না।’’
তবে বাজার নিয়ে খুশি নন পান্ডুয়ার ব্যবসায়ীরা। রবিবার সেখানের বাজারে ভিড় ছিল না। বিকিকিনি তেমন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শপিং মলের ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের অভিযোগ, কৃষিপ্রধান এই গ্রামীণ এলাকার চাষে এ বার লাভ তেমন হয়নি। বন্ধ বহু কল-কারখানাও। তারই জের পড়েছে বাজারে। তবে পুজোর মুখে বিক্রি বাড়ার আশা ছাড়ছেন না তাঁরা। পান্ডুয়া বাজারের কাপড়ের দোকানের মালিক সুশীল দেবনাথ বলেন, ‘‘ঋণ নিয়ে প্রচুর কাপড়-জামা তুলেছি। এখনও বিকিকিনি ভাল নয়। তবে পুজোর আগে অনেকে বোনাস পান। তখন বাজার ফিরবে বলেই আশা।’’
(তথ্য সহায়তা: পীযূষ নন্দী, নুরুল আবসার, প্রকাশ পাল ওসুশান্ত সরকার)