এই নির্মাণ ঘিরে শুরু চাপানউতোর। ছবি: দীপঙ্কর দে
আমজনতা নয়, পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা বিদায়ী পুরপ্রধান স্বপন সামন্তের করা নির্মাণ নিয়েই জলঘোলা শুরু হয়েছে তারকেশ্বরে। প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের একাংশ সরাসরি ওই নির্মাণ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন তাঁকে।
তারকেশ্বরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সারদা পল্লিতে স্বল্প পরিসর একটি জমিতে সম্প্রতি স্বপনবাবু ওই নির্মাণ শুরু করেন। তিনি জানান, ব্যবসার জায়গা হিসেবে ওই নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই নির্মাণকে কেন্দ্র করেই শাসক দল, তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সেটি তৈরির আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন দলেরই একাংশ।
প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের একাংশের দাবি, আশেপাশের বাসিন্দারা ওই নির্মাণ নিয়ে পুরসভায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কেউ কেউ ই-মেল করেও আপত্তি জানিয়েছেন। ওই সব অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি পুরসভায় বৈঠক হয়। সেখানেই স্বপনবাবুকে ওই কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়। ওই নির্মাণের অদূরেই থাকেন জনৈক তাপস মুখোপাধ্যায়। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছে, বিধিসম্মত ছাড় না দিয়ে ওই নির্মাণ হচ্ছে। সেই কারণে পুরসভা, মহকুমাশাসক এবং বিধায়ককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, বিধিসম্মত ছাড় দিয়ে যাতে ওই নির্মাণ করা হয়। আমরা কোনও বির্তকে জড়াতে চাই না।’’
স্বপনবাবু অবশ্য কাজ থামাতে রাজি নন। তাঁর দাবি, ‘‘বেআইনি কিছু করিনি। কাজ বন্ধ করব কেন? আসলে আমাদের দলের কেউ কেউ বাগড়া দিচ্ছে। ১৫ ফুট চওড়া জায়গার মধ্যে সাড়ে আট ফুট ছেড়েছি। এরপরও ওরা কোনও মুখে কথা বলছে? পুরসভার এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার গিয়ে জমি ফিতে দিয়ে মেপেছেন।’’ পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘পুরবোর্ড অনুমোদিত নক্শা অনুয়ায়ী ওই নির্মাণ হচ্ছে, এটুকু বলতে পারি। শহরে জায়গার সমস্যা। বহু সময় বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কাজ হয়।’’
এ নিয়ে প্রশাসকমণ্ডলীর এক সদস্যের ক্ষোভ, ‘‘আমরা যাঁরা দায়িত্বে আছি, সবাই যদি এই ‘বোঝাপড়ার ভিত্তিতে’ বেআইনি নির্মাণ করতে থাকি, তা হলে শহরের কী হাল হবে? কেউ বিধি মানবেন না, পুরবোর্ড আপত্তি করলে তা-ও মানবেন না, এটা চলতে পারে কি?’’
পুরসভার পর্যবেক্ষক নীলিমা সামন্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। সদ্য দায়িত্বে এসেছি। সবদিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’