গরমে নাজেহাল নবজাতককে নিয়ে ওয়ার্ডের বাইরে। নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে। কাজে এল না জেনারেটরও। ফলে, বেজায় গরমে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা ন’ঘণ্টা এসি বা পাখা চলল না হুগলির পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের ওই বিভাগে। সদ্যোজাত সন্তানকে স্বস্তি দিতে নাগাড়ে হাতপাখা নাড়তে হল প্রসূতি বা বাড়ির লোককে। কেউ সদ্যোজাতকে নিয়ে ওয়ার্ডের বাইরে বেরিয়ে এলেন। অন্তঃসত্ত্বারাও রীতিমতো কষ্ট পেলেন।
ওই ওয়ার্ডে ভর্তি মহিলা বা সদ্যোজাতদের যে গরমে নাকাল হতে হয়েছে, হাসপাতালের লোকজন মানছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (পান্ডুয়া) শেখ মঞ্জুর আলম বলেন, ‘‘ওই বিভাগে বৈদ্যুতিক সমস্যা হয়েছিল। তাই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। জেনারেটরও চালানো যায়নি। বেলায় আমি খবর পাওয়ার পরেই দ্রুত ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দেওয়ার কাজ করি।’’ ওয়্যারিংয়ের সমস্যার জন্য জেনারেটরও কাজ করেনি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, হাসপাতালের অন্য কোনও অংশে অবশ্য বিদ্যুতের সমস্যা হয়নি। অপারেশন থিয়েটারে সিজ়ার করে দুই মহিলার সন্তান প্রসব হয়। এ ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হয়নি।
প্রসূতি বিভাগে ভর্তি রোগীর আত্মীয়েরা জানান, ভোর পাঁচটা নাগাদ বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে এসি এবং পাখা বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা ভেবেছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে আসবে। কিন্তু, তা হয়নি। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা হতে শুরু করে। বাড়ির লোকজন বাইরে থেকে হাতপাখা কিনে আনেন।
পান্ডুয়ার দ্বারবাসিনীর বাসিন্দা ভারতী সরেন বলেন, ‘‘বুধবার রাতে মেয়েকে এখানে ভর্তি করেছি। ছেলে হয়েছে। ভোরে কারেন্ট চলে গেল। ওইটুকু বাচ্চার নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছিল। অত ভোরে দোকান খোলা ছিল না। সকালে দোকান খুললে প্লাস্টিকের হাতপাখা নিয়ে এসে নাতিকে হাওয়া করি।’’ ওই ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি মহিলা এ দিন ভর্তি ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। পান্ডুয়ার বোসপাড়ার বাসিন্দা টুকটুকি খাতুন প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে বুধবার রাতে হাসপাতালে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘গরমে খুব কষ্ট হচ্ছিল। ডাক্তারবাবু, নার্সদিদিদের বলেও অনুরোধ করি, যাতে তাড়াতাড়ি কারেন্টের ব্যবস্থা করা হয়।’’ অবশেষে, বেলা ২টো নাগাদ বিদ্যুৎ আসে ওয়ার্ডে। স্বস্তি ফেরে।