বাজারে আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চাষিরা। — নিজস্ব চিত্র।
অসময়ের বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েছেন কৃষকেরা। তার দোসর হয়েছে আলুবীজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশের কালোবাজারি। এই দু’য়ের জেরে বেজায় বিপাকে পড়েছেন হুগলির কৃষকদের একটি অংশ। এ বার কৃষকদের কাছ থেকে কালোবাজারির অভিযোগ পেয়ে অভিযানে নামল হুগলি জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বা ইবি।
আলু চাষের মরসুমে অকালবৃষ্টির জেরে জমিতে বসানো আলুবীজ নষ্টের মুখে। ফলে পুনরায় আলু চাষ করার জন্য বাজারে আলুবীজের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। আর এই সুযোগে অসাধু আলুবীজ ব্যবসায়ীরা কৃষকদের থেকে চড়া দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। হুগলির কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার থেকেই বস্তা পিছু আলুবীজের দাম বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২২০০ টাকা। সপ্তাহের শুরুতে যে দাম ছিল মেরেকেটে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা।
অগত্যা বাস্তব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার হুগলির সিঙ্গুরের বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে হানা দেন ইবি আধিকারিকরা। সিঙ্গুরের রতনপুর এলাকায় হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের ইবির ডিএসপি নিমাই চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান চলে। একটি বীজের দোকান আলুবীজের মজুত পরিমাণ, খাতা, বিলের মেমো, বিক্রয়মূল্যের তালিকা-সহ কিছুই দেখতে না পেয়ে এবং দোকানে থাকা কর্মচারীর কাছ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় সেই দোকানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ইবি আধিকারিকরা।
ডিএসপি নিমাই বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে অনেক কৃষকের জমিতে বোনা আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে এখনও অনেক জমিতে আলু বসানো বাকি। সে কারণে বাজারে আলুবীজের চাহিদা রয়েছে। তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃষকদের থেকে অতিরিক্ত দাম যাতে না নেয়, তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শন করা হচ্ছে। একটি দোকানের ম্যানেজার আলুবীজ নিয়ে সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় আমরা আপাতত সেখানে বিক্রি বন্ধ রাখতে বলেছি।’’
মিগজাউমের জেরে বুধবার রাত থেকেই ঝিরঝির করে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল হাওড়া, হুগলিতে। আর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাত্রা বৃদ্ধি পায় বৃষ্টির। দুই জেলাতেই এই সময় আমন ধানের পুরোটা মাঠ থেকে ওঠেনি। যে সব জমির ধান উঠেছে, সেগুলিতে সবে দিন সাত-দশেক হল আলু লাগানো শুরু হয়েছে। আলুর গাছ গজানো এখনও শুরু হয়নি। এই অবস্থায় নিম্নচাপের এই বৃষ্টিতে আলুবীজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অভিযোগ, তারই সুযোগ নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন একাংশের অসাধু ব্যবসায়ী। তা রুখতেই অভিযান শুরু করল ইবি।