আমতা বাসস্ট্যান্ড। ছবি: সুব্রত জানা।
একসময়ের হতকুচ্ছিত আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল এখন বেশ ঝকঝকে। শয্যাসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫০। আরও ২৪০ শয্যার নতুন ভবনের শিলান্যাসও হয়েছে। দেখে সাধারণ মানুষের চোখ আরাম পাচ্ছে। কিন্তু গুরুতর অসুখের চিকিৎসা হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগও শোনা যাচ্ছে।
আমতা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সুলভ শৌচালয়টি বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। বাসস্ট্যান্ড এবং সুলভ শৌচালয়— দু’টিই নবনির্মিত। বাসস্ট্যান্ডের পাশে তৈরি হচ্ছে আধুনিক অডিটোরিয়াম। খুশি শহরের সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ওয়াকফ বোর্ডের টাকায় তৈরি হচ্ছে ‘এডুকেশন হাব’।
চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কের (আমতা-বাগনান, আমতা-রানিহাটি, আমতা-মুন্সিরহাট এবং আমতা-উলুবেড়িয়া রোড) ধারে ৬৫টি যাত্রীশেড হয়েছে। তার অধিকাংশতেই মদ-গাঁজার আসর বসছে। কোনওটি ব্যবহার হচ্ছে সাইকেল-স্ট্যান্ড হিসেবে।
গ্রামে গ্রামে চলে গিয়েছে পিচের এবং ঢালাই রাস্তা। তৈরি হয়েছে দু’টি নতুন থানা। রাজাপুর ও চন্দ্রপুর।
আমতা-১ ব্লকের ৮টি এবং উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের ৬টি— মোট এই ১৪টি পঞ্চায়েত নিয়ে উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র। কেন্দ্রের ‘উন্নয়ন’ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ‘অপ্রাপ্তি’ও কম নয়। এই ‘প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির’ দাঁড়িপাল্লায় ভোট কোন দিকে পড়বে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে।
তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও চালু হয়নি কিসান মান্ডি। ঘরে ঘরে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়নি সব পঞ্চায়েতে। আমতা পুরসভায় উন্নীত হয়নি। আমতা শহরের জল নিকাশির ব্যবস্থা হয়নি। হয়নি আইটিআই কলেজও। কৃষি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নতিতে ‘আমতা বেসিন সংস্কার’-এর কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। আমতা শহরকে যানজট মুক্ত করার জন্য দরকার ছিল বাইপাস রাস্তা। তা এখনও হয়নি।
শুধু কি তাই? তৃণমূল শাসিত এই বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। কিন্তু নির্বাচনের পরের দিন থেকেই এই পঞ্চায়েত শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার। যার জেরে পঞ্চায়েতে প্রধান আসছেন না প্রায় একবছর ধরে। ফলে , উন্নয়নমূলক সব কাজ আটকে গিয়েছে। উন্নয়নের প্রশ্নে চন্দ্রপুর সামগ্রিক ভাবে উলুবড়িয়া উত্তর বিধানসভাকেন্দ্রে শাসক দলের কাছে একটি ‘ক্ষত’।
বিধায়ক নির্মল মাজি অবশ্য কোনও অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে যথেষ্ঠ উন্নত মানের চিকিৎসা হয়। রাজ্যের সেরা গ্রামীণ হাসপাতাল। বাইপাস রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। তিনটি পঞ্চায়েতে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল দেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলিতেও দেওয়া হবে। পরিকল্পনা হচ্ছে। আমতা পুরসভা গঠনের প্রস্তাব বিধানসভায় অনুমোদিত হয়েছে। নিম্ন দামোদরের সংস্কার হচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায়। তাতেই আমতা বেসিনেরও সংস্কার হবে। শহরের নিকাশি ব্যবস্থারও সংস্কার করা হয়েছে। পুরসভা হলে এই সমস্যা পুরো মিটে যাবে।’’