ঘিঞ্জি: বাগনান বাসস্ট্যান্ড। ছবি: সুব্রত জানা।
সূর্য ডোবার পরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বাগনান স্টেশনের উড়ালপুলের মাঝখানে দাঁড়ালে এ শহরের বর্ধিষ্ণু রূপ ভালই মালুম হয়।
রাস্তায় রাস্তায় ফুটে ওঠে আলোর মালা। প্রত্যন্ত গলিও আলোর ছটা থেকে বঞ্চিত নয়। দূর থেকেই চোখে পড়ে জমজমাট শহর।
হাওড়া গ্রামীণ এলাকার মানচিত্রে বাগনান শহর দিনে দিনে উল্লেখযোগ্য জায়গা করে নিচ্ছে। বাগনান থেকে শুধু হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার নয়, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুর জেলারও যোগাযোগ আছে। মুম্বই রোড চলে গিয়েছে শহরের দক্ষিণ দিক দিয়ে। শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের রেলপথ। যোগাযোগের এই সুবিধার জন্য বাগনানে লোকের ভিড় বাড়ছে।
হলে কী হবে! এখনও পুরসভা স্তরে উন্নীত হল না বাগনান। এ শহরকে পুরসভায় পরিণত করার দাবি সাধারণ মানুষের অনেক দিনের। ভাল রাস্তা হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় আলো বসেছে। পানীয় জলের সু-বন্দোবস্ত হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে। আন্টিলায় নতুন পার্ক তৈরি হয়েছে। সামতাবেড়ে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবন লাগোয়া জমিতে শরৎ স্মৃতি উদ্যানের নির্মাণকাজ চলছে। এ সব দেখা সত্ত্বেও শহরবাসীর আক্ষেপ যাচ্ছে না। কারণ, খাতায়-কলমে বাগনান এখনও পঞ্চায়েত এলাকা।
বাগনান-১ ব্লকের ছ’টি এবং বাগনান-২ ব্লকের আটটি— অর্থাৎ, মোট ১৪টি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে বাগনান বিধানসভা কেন্দ্রের বিস্তার। বিধায়ক অরুণাভ সেন তৃণমূলের। দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ১৪টি পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ফলে, সমন্বর রেখে ভাল ভাবে কাজ করা যাচ্ছে বলে দাবি বিধায়কের।
শুধু শহরেই যে রাস্তা, আলো এবং বিদ্যুদয়নের কাজ হয়েছে, এমন নয়। একই ছবি গ্রামেও। তবে, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজে এখনও কিছুটা ঘাটতি আছে। জেলার অন্য কিসান মান্ডিগুলি যখন তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে, তখন বাগনান-১ ব্লক কিসান মান্ডি হইহই করে চলছে।
শাসক দল এ সব ‘কৃতিত্ব’ দাবি করলেও বিরোধীরা অন্য কথা বলছেন। সিপিএমের দাবি, উন্নয়নের যাবতীয় পরিকাঠামো বাম আমলেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিজেপি আবার অপরাধের বাড়বাড়ন্তের কথা বলছে। বিরোধীদের দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিধায়ক।
তবে, ১০ বছর আগে তৈরি হয়ে পড়ে থাকা বাগনান ফুলবাজার আজও চালু হয়নি। বাগনান-শ্যামপুর রোড সংস্কার চলছে সেই ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে। বাগনান বাসস্ট্যান্ড বিকেন্দ্রীকরণের কথা থাকলেও হয়নি।
বিধায়ক ওই সব না-হওয়া কাজের আশ্বাস দিচ্ছেন। বিধানসভা ভোট কিন্তু কড়া নাড়ছে।