বার্তা: পরিবেশ নিয়ে চলছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
নির্বিচারে গাছ কাটা, ইচ্ছেমতো পুকুর ভরাট, বেআইনি ভাবে মাটি কাটা— প্রাকৃতিক সম্পদের বিনাশ রোজকার ঘটনা। প্লাস্টিকের অঢেল ব্যবহার আটকানো যাচ্ছে না। বর্জ্য নিষ্কাশন বা নদী-খাল-বিল সংস্কারের কাজেও বহু ক্ষেত্রে গতি নেই। সব মিলিয়ে প্রভাব পড়ছে পরিবেশে। এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশের উপরে যথেচ্ছাচারে সামগ্রিক বিপদ নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বিভিন্ন দলের প্রার্থী, ভোটারদের সচেতন করতে বিভিন্ন জেলায় পরিবেশকর্মীরা পথে নেমেছেন।
‘পরিবেশবান্ধব সক্রিয় পঞ্চায়েত’-এর দাবিতে একটি পুস্তিকা এবং লিফলেট প্রকাশ করেছে হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ ও সবুজ মঞ্চ। রবিবার উলুবেড়িয়ার জগৎপুর আনন্দ ভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুলে এ নিয়ে আলোচনায় পরিবেশকর্মীদের দাবি, আবর্জনার সঠিক ব্যবহার, তরল আবর্জনা পরিশোধন প্রয়োজন। নদী-খাল সংস্কার ও সংরক্ষণ, বনাঞ্চল ও সবুজ সংরক্ষণ করতে হবে। তাঁরা জানান, পুস্তিকা ও লিফলেট প্রার্থীদের বিলি করা হবে। ভোট মিটলে জয়ী প্রার্থীদের কাছে ফের দরবার করা হবে। অনুষ্ঠানে ছিলেন পরিবেশকর্মী নব দত্ত, জয়ন্ত বসু, সৌরেন্দুশেখর বিশ্বাস, সম্রাট মণ্ডল, ওই স্কুলের শিক্ষকঅজয় দাস।
দিন কয়েক আগে হুগলি জেলার বিভিন্ন পরিবেশ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের তরফেও মিলিত ভাবে প্রকাশিত আবেদনপত্রে একই দাবি জানানো হয়। পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় জোর দেওয়া, বেআইনি ভাবে বাজি ও ডিজের ব্যবহার বন্ধের আবেদন জানানো হয়। বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যেরা নানা জায়গায় এই আবেদনপত্র বিলি করছেন। সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’র সভাপতি, পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, গ্রামাঞ্চল আগের মতো সবুজএবং নির্মল নেই। শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই পরিবেশ ‘আক্রান্ত’। বাড়ছে দূষণ। পঞ্চায়েত ভোটকে ‘পরিবেশবান্ধব’ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও, প্রচুর ফ্লেক্স চোখে পড়ছে, যা পরিবেশের পক্ষে সহায়ক নয়। এই পরিস্থিতিতে, পরিবেশ রক্ষায় আইন যথাযথ ভাবে কার্যকর করা দরকার। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা জরুরি।
তবে, সচেতনতা একেবারে নেই, তা নয়। চুঁচুড়া-মগরা ব্লকে সিপিএমের একাধিক প্রার্থী প্রচারে গাছ বাঁচানোর আবেদন জানাচ্ছেন। বলাগড় ব্লকের জিরাট পঞ্চায়েতের দুই তৃণমূল প্রার্থী সুমন মণ্ডল এবং তপন দাসের প্রতিশ্রুতি, জিতলে পরিষেবা এবং নানা প্রকল্প রূপায়ণের পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে কাজ করবেন। সবুজায়ন এবং প্লাস্টিকমুক্তির প্রতিশ্রুতি তাঁদের মুখে। ঘটনা হচ্ছে, হুগলির আর পাঁচটি জায়গার মতো জিরাট তথা বলাগড় ব্লকেও আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাছ কাটা, জলাশয় বোজানোর অভিযোগ রয়েছে। গঙ্গা থেকে বেআইনি ভাবে মাটি, বালি তোলার কারবারে বলাগড় পরিচিত নাম। বেআইনি বালির কারবারের অভিযোগ রয়েছে আরামবাগ মহকুমাতেও।