হাওড়ার এই সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার সময় অচৈতন্য হয়ে যায় বিদীপ্ত ঘোষ (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র।
সাঁতার শেখার সময় শিশুমৃত্যুর ঘটনায় হাওড়ার স্বামীজি সংঘ ক্লাবের সুইমিং পুলটি সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল পুলিশ। এই ঘটনায় ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। গোটা ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকেলে হাওড়ার ওই ক্লাবের সুইমিং পুলে সাঁতার শিখতে গিয়ে মৃত্যু হয় ন’বছরের বিদীপ্ত ঘোষের। প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিশুদের সাঁতার শেখানোর সময় সুইমিং পুলের অতিরিক্ত জল খেয়ে বিদীপ্ত অচৈতন্য হয়ে যায় বলে দাবি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বিদীপ্তর পরিবারের অভিযোগ, প্রশিক্ষকদের গাফিলতির জন্য এই দুর্ঘটনা। শিশুটির এক আত্মীয় সব্যসাচী ঘোষের দাবি, ‘‘বিদীপ্তর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। সাঁতার শেখানোর সময় সঠিক নজরদারি না থাকায় এত বড় কাণ্ড ঘটে গেল।’’ যদিও নজরদারি না থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক তপন দাস। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সাঁতারের প্রশিক্ষণের সময় সব সময় নজরদারি থাকে। আমাদের যা পরিকাঠামো রয়েছে, তা নিয়ে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’’
বিদীপ্তর মৃত্যুর পর পুলিশের কাছে গোড়ায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি তার পরিবারের লোকজন। তবে প্রাথমিক ভাবে তদন্ত শুরু করে চ্যাটার্জিহাট থানা। শেষমেশ শনিবার সন্ধ্যায় ওই সুইমিং পুলের প্রশিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে এফআইআর করেন বিদীপ্তর মামা গৌতম ঘোষ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে গাফিলতির অভিযোগে মামলা রুজু করেছে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে প্রশিক্ষকদের শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই ঘটনায় ক্লাবের গাফিলতির কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে পুর প্রশাসন। শনিবার দুপুরে সুইমিং পুল পরিদর্শনে যান হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘কিছু একটা গাফিলতি রয়েছে। তবে তা তদন্তসাপেক্ষ। যদিও সুইমিং পুলে জলের স্বচ্ছতা যতটা থাকা দরকার, তা চোখে পড়েনি। পুলের জলে বেশি ধুলো থাকাটা শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।’’ প্রশাসনের অভিযোগ মানতে নারাজ ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাবের সম্পাদকের দাবি, ‘‘সুইমিং পুলের জল পরিষ্কার রাখার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’