ক্লাবে তালা ঝোলানো হচ্ছে বুধবার রাতে। ছবি: তাপস ঘোষ।
সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ব্যান্ডেলের একটি ক্লাবে মদ-জুয়ার আসর বসছিল প্রতি রাতে। প্রতিবাদ করায় স্থানীয় তিন বাসিন্দাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে ক্লাবের সম্পাদক-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের উপস্থিতিতে বুধবার রাতে ক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কোদালিয়ার বৈশাখী সরণিতে ‘ব্যান্ডেল কোদালিয়া সঙ্ঘ’ নামে ওই ক্লাবে খেলাধুলোর উন্নয়নে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে কী করে মদ-জুয়ার আসর চলে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়। বিধায়ক অসিতবাবু বলেন, ‘‘ক্লাবটি অনুদান পেয়েছে, এটা ঠিক। তবে, অসামাজিক কাজ বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগ পেয়েই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চুরি ঠেকাতে এলাকায় রাত পাহারা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাহারার সময় দেখা যায়, ক্লাবে মদের আসর চলছে। অভিযোগ, আসর বন্ধ করতে বললেও ক্লাবের ছেলেরা শোনেনি। উল্টে গালিগালাজ করে। এ নিয়ে বচসা হয় এর মধ্যেই মদ্যপ যুবকেরা প্রতিবাদকারী তিন জনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বাড়াবাড়ি করলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
চেঁচামেচিতে পড়শিরা ঘুম ভেঙে উঠে এলে হামলাকারীরা পালায়। আহতেদের চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুভাশিস গোস্বামী নামে এক জনের আঘাত গুরুতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, বুধবার রাতে ফের ক্লাবে মদের আসর বসে। এলাকাবাসী বিধায়ক অসিত মজুমদারকে বিষয়টি জানান। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বিধায়ক ঘটনাস্থলে আসেন। ততক্ষণে ক্লাব বন্ধ করে সদস্যেরা চলে গিয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ শুনে বিধায়ক ক্লাব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি পুলিশ ডাকেন। এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয় ওই রাতেই।
ধৃতদের নাম অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, সমীর বাগ, চঞ্চল সরকার এবং সঞ্জয় সরকার। অরূপ ক্লাবের সম্পাদক। অভিজিৎ এবং সমীর সদস্য। অপর দু’জন ‘বহিরাগত’। তাদের বাড়ি ব্যান্ডেল স্টেশনের কাছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে ক্লাবের পক্ষ থেকে সংলগ্ন মাঠে ছোটদের নানা খেলার আয়োজন করা হতো। এখন সে সব বন্ধ। এখন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মদ-জুয়ার আসর বসে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবব্রত দে বলেন, ‘‘স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে বহিরাগতরা এসে পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে।’’ রাতে পুলিশি টহলদারি বাড়ানোর দাবিও তুলেছেন এলাকাবাসী।