বৃহস্পতিবার সকালে লোকজন রাস্তায় বেরোলেও কোথাও খুব একটা জমায়েত হতে দেখা যায়নি। নিজস্ব চিত্র।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবার আরও স্বাভাবিক হল রিষড়ার পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরল রিষড়ার জনজীবন। ধীরে ধীরে রাস্তায় বেরোতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। খুলে গিয়েছে সমস্ত দোকানপাটও। যদিও ক্রেতার সংখ্যা হাতেগোনা। দোকানদারদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনের উপর ভরসা রেখেই তাঁরা দোকান খুলতে পেরেছেন।
এই প্রসঙ্গে রিষড়ার চার নম্বর গেট এলাকার সব্জি বিক্রেতা শম্ভুনাথ দলপতি বলেন, ‘‘এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে বলেই সকলে দোকান খুলতে পারছে। পুলিশ ছাড়া আর কার উপরই বা ভরসা করব? তবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, বাজার খুললেও মানুষ ভয়ে কেনাকাটা করতে আসছেন না। এলাকায় যেন তাড়াতাড়ি শান্তি ফিরে আসে।’’
অন্য এক সব্জি বিক্রেতা প্রসূন দেবনাথের কথায়, ‘‘এখন পরিস্থিতি আগের থেকে ভাল। পুলিশ-প্রশাসন যত ক্ষণ আছে তত ক্ষণই ভরসা। সবাই যেন ভাল ভাবে শান্তি বজায় রাখে। আমরা শান্তি চাইছি।’’
গত রবিবার থেকে রিষড়ার কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ায় প্রভাব পড়েছিল জনজীবনে। বন্ধ হয়েছিল দোকানবাজার। জারি হয়েছিল ১৪৪ ধারা। কিন্তু সেই পরিস্থিতি খানিকটা হলেও স্বাভাবিক হতে দেখা গিয়েছে বুধবার সকাল থেকে। একই চিত্র দেখা গেল বৃহস্পতিবার সকালেও। রিষড়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসনও। বৃহস্পতিবার সকালে লোকজন রাস্তায় বেরোলেও কোথাও খুব একটা জমায়েত হতে দেখা যায়নি। এখনও জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা।
বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী। নতুন করে এলাকায় যাতে অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেও আলাদা সতর্কতা বজায় রাখছে প্রশাসন। সোমবার রাতে রিষড়ার চার নম্বর গেট এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছিল। সেখানেও বাড়তি টহলদারি চালাচ্ছে পুলিশের গাড়ি। জায়গায় জায়গায় র্যাফ নামিয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার হুগলির রিষড়ার সন্ধ্যাবাজার এলাকায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ- সভাপতি দিলীপ ঘোষের মিছিলে অশান্তি ছড়ায়। ইটবৃষ্টি এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় অনেককে আটক করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রিষড়ায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সোমবার রাতেও হুগলির রিষড়া স্টেশনের কাছে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। রিষড়া স্টেশনের চার নম্বর রেল গেট এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ট্রেন চলাচল। ফলে বহু যাত্রী দুর্ভোগের মুখে পড়েন। এর পর থেকে পরিস্থিতি আরও থমথমে হয়ে যায়। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ে। সেই পরিস্থিতি বদলাতে এবং সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে আরও সক্রিয় হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। পুলিশের উপর আস্থা রেখেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টায় রয়েছেন স্থানীয়রা।