Drainage Trouble

সংস্কার হয়নি মূল নিকাশির, এখনও জমা জলে ভাসছে হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা

পুরসভার নিকাশি বিভাগের কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের পাশে একটি ব্যাঙ্কোয়েট হল তৈরি হওয়ার সময়ে নিকাশি নালাটি কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার জেরেই এই সমস্যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ০৬:৫১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

হাওড়া শহরের মূল নিকাশি নালা ডাবল ব্যারেলের সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টি থামার ২৪ ঘণ্টা পরেও জমা জলে ডুবে আছে বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত শিবপুর, মধ্য হাওড়া এবং উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে হাঁটুসমান জল জমে ছিল। জলমগ্ন ছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া ড্রেনেজ ক্যানাল রোডও। জমা জলের কারণে দিনভর নাজেহাল হলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাওড়া পুরসভার কর্তারা অবশ্য নিজেদের হয়ে সাফাই দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু থাকার জন্যই নাকি শহরের প্রধান নিকাশি নালার সংস্কারের কাজের বরাত দেওয়া যায়নি। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচনী আচরণবিধি যে বলবৎ হবে, তা তো অনেক আগে থেকেই জানা ছিল। তা হলে সংস্কারের কাজ আগেই করা হল না কেন?

Advertisement

পুরসভার নিকাশি বিভাগের কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের পাশে একটি ব্যাঙ্কোয়েট হল তৈরি হওয়ার সময়ে নিকাশি নালাটি কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার জেরেই এই সমস্যা। হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জমা জল নামাতে প্রাথমিক ভাবে পুরসভার নিকাশি বিভাগের কর্মীরা নালা থেকে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছেন। ওই ব্যাঙ্কোয়েট তৈরির জেরে নিকাশি নালার কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, জল নামার পরে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

একটু বেশি বৃষ্টি হলেই হাওড়ায় যে জল জমে যায়, তা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে, গত বছর বর্ষার অনেক আগেই পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডের নিকাশি নালা থেকে পাঁক তোলার কাজ শুরু হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির জল খুব বেশি জমেনি। কিন্তু অভিযোগ, চলতি বছরে সেই কাজ ঠিক মতো হয়নি। তাই এ বারের বর্ষায় শহরবাসী যে জমা জলে নাজেহাল হবেন, তা এক রকম নিশ্চিতই ছিল। ঘূর্ণিঝড় রেমালের সঙ্গে আসা প্রবল বৃষ্টির জেরে হাওড়া শহরের যে হাল হয়েছে, তাতেই বোঝা যাচ্ছে, আসন্ন বর্ষায় আরও কতটা ভয়াবহ হতে পারে সেই ছবি। বৃষ্টির জমা জলে ডুবে গিয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র হাওড়া ময়দান চত্বরে থাকা রেলের আবাসন। সেখানে জলবন্দি হয়ে পড়েন ৮৪ ঘর বাসিন্দা। এ ছাড়াও জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল শহরের বড় বড় একাধিক রাস্তা, অলিগলি, মাঠ-ঘাট থেকে বিভিন্ন আবাসন। পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছোট-বড় ৬৭টি পাম্প চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গেই চালানো হয়েছে ছ’টি মোবাইল পাম্প।

Advertisement

কিন্তু এত কিছুর পরেও এ দিন দেখা গিয়েছে, জমা জলে ডুবে রয়েছে মধ্য হাওড়ার তাঁতিপাড়া লেন, ড্রেনেজ ক্যানাল রোড, বেলগাছিয়া এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ, টিকিয়াপাড়া, উত্তর হাওড়ার নোনাপাড়া, ঘোষপাড়া, দশরথ ঘোষ লেন, মহীনাথ পোড়েল লেন। কোথাও হাঁটু, কোথাও বা কোমর সমান জল জমে রয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন পুর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ আধিকারিকেরা জলমগ্ন এলাকাগুলিতে যান। পরে পুর চেয়ারম্যান জানান, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের পাশ দিয়ে যাওয়া শহরের মূল নিকাশি নালা ডাবল ব্যারেল দিয়ে সমস্ত বর্জ্য জল পদ্মপুকুর জলা হয়ে গঙ্গায় পড়ে। ওই নালা পরিষ্কার হলেই সমস্যা মিটে যাবে। ভোট মিটে গেলেই সেই কাজের বরাত দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement