রানিহাটি মোড়ে যানজট। নিজস্ব চিত্র
ব্যস্ত সড়কে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি। যাত্রীদের অপেক্ষা হয় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। এটাই রোজনামচা হাওড়ার মুম্বই রোডের পানিহাটি মোড়ের। এখানে সিগন্যাল পোস্টের দু’ দিকে অর্থাৎ খড়গপুরের দিকে পানিয়াড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এবং কলকাতার দিকে কান্দুয়া পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার অংশে লেগে থাকে নিত্য যানজট। এই পথে প্রতিদিন ছোট ও বড় মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার গাড়ি চলাচল করে। যানজটে ভোগেন সেই যাত্রীরাও।
কেন এই যানজট?
এই এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বে আছে হাওড়া সিটি ট্রাফিক পুলিশ। তারই এক কর্তা জানান, রানিহাটি মোড়ে মুম্বই রোড থেকে বেরিয়ে গিয়েছে রানিহাটি-আমতা রোড। এটি রাজ্য সড়ক হওয়ায় এখানে গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি। সেই গাড়িগুলিকে ছাড়তে গিয়ে অনেক সময় লাগে। তার জন্য বন্ধ রাখতে হয় মুম্বই রোডে যান চলাচল। তারই প্রভাবে এই যানজট।
ট্রাফিক কর্তারা এই যানজটের জন্য দুষছেন রাস্তার জবরদখলকারীদেরও। এক কর্তার কথায়, ‘‘রানিহাটিতে আমতা রোড এবং মুম্বই রোড—দুই জায়গাতেই রাস্তার ধার দখল করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সেটিও এখানে যানজটের একটি কারণ।’’
রাস্তার জবরদখলকে যানজটের অন্যতম কারণ বলে মানছেন জাতীয় সড়ক সংস্থার আধিকারিকদের একাংশও। তাঁরা জানান, রাস্তায় বসে ব্যবসা না করার অনুরোধ জানিয়ে মাইক প্রচার করা হয়। তবে তাঁদের অভিযোগ, জবরদখলকারীদের পিছনে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলির মদত থাকায় তাঁদের ওঠানো যায় না।
জবরদখলের কথা মানতে নারাজ পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় কেউ বসে ব্যবসা করেন না। মুম্বই রোডের সার্ভিস রোডে অনেকেই ব্যবসা করেন। তবে তাঁদের জন্য যানজট হয় না।’’ একই দাবি ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ফরিদ মোল্লারও।
এই অবস্থায় উড়ালপুলই একমাত্র ভরসা বলে দাবি বিভিন্ন মহলের। গুলশন বলেন, ‘‘উড়ালপুল হলেই রানিহাটি মোড়ে যানজট মিটবে। একবার জাতীয় সড়ক সংস্থা এই এলাকা পরিদর্শন করেছিল। তাতে আমরা কয়েকজন বিধায়ক ছিলাম। সেই সময়ে এখানে উড়ালপুলের প্রস্তাব দিই। তারপরে প্রায় দু’বছর কেটে গিয়েছে। আর সাড়াশব্দ নেই।’’
ফরিদও বলেন, ‘‘উড়ালপুলের জন্য এলাকায় রাস্তার মাপজোক হল। শুনেছিলাম, উলুবেড়িয়ার কালীতলা উড়ালপুলের কাজ শেষ হয়ে গেলেই রানিহাটির কাজ শুরু হবে। প্রায় দু’বছর আগে কালীতলার কাজ শেষ হয়েছে। রানিহাটির কথা মনে হয় ভুলে গিয়েছে জাতীয় সড়ক সংস্থা।’’
হাওড়া সিটি পুলিশ থেকেও জাতীয় সড়ক সংস্থার কাছে রানিহাটিতে উড়ালপুল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এ বিষয়ে হাওড়ায় মুম্বই রোডের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় সড়ক সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রানিহাটির উড়ালপুলের প্রস্তাব দিল্লিতে জাহাজ ও পরিবহণ মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলেই কাজ শুরু হবে।’’