বিক্ষোভ: ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভার কাজের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিল। রবিবার ডানকুনিতে। ছবি: দীপঙ্কর দে।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া পুরসভা, এমন অভিযোগ তুলে এ বার পথে নামল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রবিবার শহরের কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার করে বিজেপি এবং সিপিএম। ছড়ানো হয় মশা মারার তেল। যদিও পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী এই কর্মসূচি লোক দেখানো বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় সারা বছর রাস্তায় নেমে কাজ করেন পুরকর্মী ও আধিকারিকেরা। আর বিরোধীরা এক দিন রাস্তায় নেমেছেন। ওঁদের ওই কর্মসূচি ভিত্তিহীন।’’
প্রসঙ্গত, হাওড়া শহরে ইতিমধ্যে ডেঙ্গি সংক্রমিতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। বেসরকারি সূত্র অনুযায়ী, মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভা বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে বেড়ে চলেছে মৃত্যু। আর্বজনা নিয়মিত সাফ করা হচ্ছে না। দেখা মিলছে না মশার লার্ভা নিধনকারী দলের।
এ দিন হাওড়া জেলা বিজেপির দক্ষিণ হাওড়া, ডোমজুড় এবং শিবপুর মণ্ডলের তরফে ওই এলাকাগুলিতে মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। বিজেপির জেলা সদর সভাপতি মণিমোহন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভার ব্যর্থতা তুলে ধরার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে আমরা পথে নেমেছি।’’
বিজেপি ছাড়াও এ দিন পথে নেমেছিল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের রেড ভলান্টিয়ার্সের তরফে কদমতলা এলাকার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জঞ্জাল পরিষ্কার, মশা মারার তেল ছড়ানোর মতো কর্মসূচি করা হয়। দলের হাওড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সোমনাথ গৌতম বলেন, ‘‘আমরা প্রতিটি এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গি-সচেতনতার প্রচার করছি।’’ অন্য দিকে, সর্বভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষ ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠনের তরফেও এ দিন টিকিয়াপাড়ায় একই কর্মসূচি নেওয়া হয়।
যদিও সুজয়বাবুর দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমেছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘চলতি বছরের ৪২তম সপ্তাহে পুর এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৩২৫। ৪৩তম সপ্তাহে তা কমে হয় ২৭৫। ৪৪তম, অর্থাৎ গত সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১৯৭ জনে। পুরসভা কাজ করছে বলেই সুফল পাওয়া যাচ্ছে।’’
একই দাবি করেছেন হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গির লেখচিত্র এখন নিম্নমুখী। জেলা স্বাস্থ্য দফতর তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলিকে পরীক্ষা আরও বাড়াতে বলা হয়েছে।’’