জলের অপচয় ও চুরি বন্ধ করতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার থেকে শহর জুড়ে অভিযান শুরু করলেন হাওড়া পুরকর্তারা। ফাইল ছবি।
এখনও পর্যন্ত বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না আসায় আটকে রয়েছে পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের জন্য গঙ্গা থেকে জল তোলার মূল জেটির সংস্কার ও পাম্প হাউস তৈরির কাজ। পাশাপাশি, তীব্র গরমে গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় ওই প্রকল্পে জলের সরবরাহ কমে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই দ্বিমুখী সমস্যার কারণে চলতি গ্রীষ্মে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে হাওড়া পুর প্রশাসন। তাই জলের অপচয় ও চুরি বন্ধ করতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার থেকে শহর জুড়ে অভিযান শুরু করলেন পুরকর্তারা।
হাওড়ার পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের জন্য গঙ্গা থেকে জল তোলার ইনটেক জেটি রয়েছে বটানিক্যাল গার্ডেনে। তার পিছনে কিছুটা দূরে রয়েছে পাম্প হাউস। সেখানে থাকা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চারটি পাম্প দিয়ে জল তুলে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে পাঠানো হয় দানেশ শেখ লেনের কাছে মূল জল প্রকল্পে। সেখান থেকে পরিস্রুত জল গোটা হাওড়ায় সরবরাহ করা হয়। গ্রীষ্মে যখন গঙ্গার জলস্তর নেমে যায়, তখন পাম্প হাউসের ১০০ ফুট দূরত্বে থাকা ইনটেক জেটি থেকে জল পাম্প করে তুলতে সমস্যা হয় বলে জানাচ্ছে পুরসভা।
এর জন্য কেএমডিএ ইনটেক জেটির উপরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ করে পাম্প হাউস তৈরির পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ সেই কাজ করার অনুমতি দিতে টালবাহানা করায় তা আজও শুরু করা যায়নি।
এমন অবস্থায় জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে, সেই আশঙ্কা করে জলের অপচয় ও চুরি বন্ধ করতে এ দিন থেকেই অভিযান শুরু করেছে পুরসভা। এ দিন দাশনগরের শানপুর থেকে ওই অভিযান শুরু হয়। আগামী দিনে বিভিন্ন এলাকায় এমন অভিযান হবে বলে জানা গিয়েছে। রাস্তার ধারের কল থেকে কী ভাবে জলের অপচয় হচ্ছে, কী ভাবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারে বা জল বিক্রির জন্য রাস্তার ধারের কল থেকে জল চুরি হচ্ছে, তা অভিযানে বেরিয়ে দেখা হবে।
পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথমে পানীয় জলের অপচয় ও চুরি বন্ধের জন্য পুরসভা ও স্থানীয় থানার তরফে বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তাতে কাজ না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, সচেতনতার অভাবে প্রতিদিন শহরে প্রচুর জল নষ্ট হয়। কারণ, রাস্তার ধারের সংযোগ থেকে কল চুরি হয়ে যায়। এর ফলে জল প্রকল্প থেকে জল ছাড়লে পাইপ দিয়ে তা বেরিয়ে যায়। হাওড়া শহরের যে সব এলাকায় এমন হচ্ছে, সেই এলাকাগুলি চিহ্নিত করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।