Russia Ukraine War

ইউক্রেনকে ফের বার্তা, আইসিবিএম ছুড়ল রাশিয়া

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হাজার দিন পেরিয়ে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যে ‘অঙ্কে’ মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৬
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মস্কো, ২১ নভেম্বর: ফের একবার হুঁশিয়ারি রাশিয়ার। গত কালই মস্কোর ‘নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন’ আনুষ্ঠানিক ভাবে বদল করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর আজ এই প্রথম বার তারা একটি আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, সংক্ষেপে আইসিবিএম) ছুড়ল ইউক্রেনে। পরমাণু অস্ত্রবিহীন ক্ষেপণাস্ত্রটি যে কঠিন সতর্কবার্তা, সীমালঙ্ঘন করলে যে যুদ্ধাস্ত্রের পরিবর্তে পরমাণু অস্ত্র ছোড়া হবে, ইউক্রেন ও তার পশ্চিমের মিত্রদের সে কথাও মনে করাতে ভোলেনি মস্কো।

Advertisement

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হাজার দিন পেরিয়ে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যে ‘অঙ্কে’ মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর মাত্র দু’মাস সিংহাসনে রয়েছেন তিনি। নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিন-ঘনিষ্ঠ। তিনি বহু আগে থেকে বলে আসছেন, দায়িত্ব নিয়েই তিনি যুদ্ধে ইতি টানবেন। এই অবস্থায় বাইডেনের যুদ্ধে ‘ঘৃতাহুতির’ মধ্যে অনেকেই আভ্যন্তরীণ রাজনীতি দেখছেন। রাশিয়ার সতর্কবার্তা উপেক্ষা ইউক্রেনকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, ল্যান্ডমাইন দিয়ে চলেছেন বাইডেন। এত দিন রুশ-অধিকৃত ইউক্রেনের অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ফেলছিল কিভ। কিন্তু সম্প্রতি আমেরিকা রাশিয়ার ভিতরে দূরপাল্লার ক্রুজ় ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ফেলার অনুমতি দিয়েছে ইউক্রেনকে। একই কাজ করেছে ব্রিটেনও। ব্রিটেন-আমেরিকার ছাড়পত্র মেলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার মাটিতে আমেরিকার পাঠানো এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ও ব্রিটেনের ‘স্টর্ম শ্যাডো’ ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেছে ইউক্রেন। রাশিয়া আজ তার জবাব দিয়েছে। তবে ইউক্রেনের হামলায় তাদের দিকের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মুখ খোলেনি মস্কো। এই পরিস্থিতির কথা আঁচ করে আগেভাগেই কিভের আমেরিকান দূতাবাস সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। দূতাবাস কর্মীদেরও নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়।

ইউক্রেনের বায়ুসেনা আজ একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, সকালে ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ফেলেছে রাশিয়া। তাদের অভিযোগ, সরকারি পরিকাঠামোগুলি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়াই একমাত্র লক্ষ্য রাশিয়ার। বাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, রাশিয়ার
অ্যাস্ট্রাখান অঞ্চল থেকে আন্তর্মহাদেশীয় আইসিবিএম ছোড়া হয়েছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম আইসিবিএম ছুড়ল রাশিয়া। ইউক্রেনের বায়ুসেনা দাবি করেছে, তারা ছ’টি ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করেছে। কিন্তু তার মধ্যে একটি আইসিবিএম নাকি, তা খোলসা করেনি তারা। রুশ বোমায় নিপ্রো শহরের বহু বাড়ি
ভেঙে পড়েছে, চারদিকে ধ্বংসের ছবি। একটি শিল্পাঞ্চল ও একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে গিয়েছে।

Advertisement

মস্কোকে সংবাদমাধ্যমের তরফে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তারা প্রশ্ন এড়িয়ে যায়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ স্পষ্টই বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কিছু বলার নেই।’’ তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যাতে পরমাণু যুদ্ধের দিকে এগোতে না হয়, সেই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য তারা ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ করছে। তারা জানিয়েছে, নতুন যে নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন বা পরমাণু চুক্তিতে সই করেছেন পুতিন, তাতে এ বার পরমাণু শক্তিধর নয়, এমন দেশেও পরমাণু অস্ত্র ফেলতে পারবে রাশিয়া। তবে মস্কো জানিয়েছে, এখনও এমন কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। তারা বরং বারবার করে সতর্ক করতে চাইছে আমেরিকা-ইউরোপকে। সংবাদ সংস্থা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement