উদ্ধার করা পিস্তল। নিজস্ব চিত্র।
একাধিক অভিযোগে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন বাঁশবেড়িয়ার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা সত্যরঞ্জন ওরফে সোনা শীল। এ বার তাঁর বছর চব্বিশের ভাগ্নেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সুমন শীল। বাড়ি বাঁশবেড়িয়ার মিলনপল্লিতে। শুক্রবার রাতে সেখানে থেকেই মগরা থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
কী ভাবে ধরা পড়ল ওই যুবক?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, শুক্রবার সুমনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিয়ো ছবি পোস্ট করা হয়। তাতে এক জনকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করতে এবং তাতে ম্যাগাজিন ভরে গুলি চালাতে দেখা যায়। কারও মুখ অবশ্য দেখা যায়নি। হাতের অংশটুকুই দেখা যায়। ওই ছবি ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের কাছেও তা পৌঁছে যায়। এর পরেই পুলিশ সুমনের বাড়িতে হানা দেয়। তদন্তকারীদের দাবি, তল্লাশিতে সুমনের বাড়ি থেকে একটি সেভেন এমএম পিস্তল মেলে। পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্র আইনের ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
হুগলি (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই যুবকের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টের ভিডিয়ো পোস্টে ওই ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রই দেখা গিয়েছে। জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে, তার বাড়িতে যে অস্ত্রটি পাওয়া গিয়েছে, সেটি নিয়েই সে-ই ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সুমন কিছু করে না। মামা সোনা শীলের সঙ্গেই ঘোরাঘুরি করে। পুলিশ আধিকারিকদের অনুমান, ‘হিরোগিরি’র জন্য সে স্যোসাল মিডিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি পোস্ট করেছিল। পুলিশের কাছে ওই ছবি পৌঁছে যাবে, তা সম্ভবত সে ভাবেনি। আগ্নেয়াস্ত্রটি সে কোথা থেকে পেয়েছে বা কিনেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে পুলিশ জানিয়েছে।
সোনা বাঁশবেড়িয়ার বিদায়ী পুরপ্রধান এবং পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরিজিতা শীলের স্বামী। সম্প্রতি সোনার বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে পুলিশের কাছে। গত মাসে পুর-প্রশাসক তথা বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী গুলিবিদ্ধ হন। সেই ঘটনাতেও সোনা অভিযুক্ত। ওই ঘটনার পরেই সোনা গ্রেফতার হন। তাঁর কয়েক জন ঘনিষ্ঠকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। আদিত্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার দিনই পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সনের পদ থেকে অরিজিতাকে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। ওই পদে আদিত্যকে বসানো হয়। আদালতের নির্দেশে সোনা এখন চুঁচুড়া থানার হেফাজতে রয়েছে।