সাহানুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা (উপরে)। বাড়ির সামনে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
তখনও দিনের আলো ফোটেনি। গ্রাম জুড়ে নিস্তব্ধতা। শনিবার ভোররাতে বুটের শব্দে ঘুম ভাঙল উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের মহিশালি গ্রামের। দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে জানা গেল, গ্রামেরই ছেলে শেখ সাহানুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে সিবিআই। আটকও করা হয়েছে তাঁকে। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা জানিেয়ছেন, পাসপোর্ট দুর্নীতির তদন্তের জন্যই এই অভিযান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসারে অভাব থাকলেও পড়াশোনায় ভাল ছিলেন সাহানুর। পড়াশোনা শেষের পর তিনি মুম্বইতে জরির কাজ করতে যান। সেখান থেকে ফিরে বিমাকর্মী হিসেবে কাজ করেছিলেন। ৯ বছর আগে পাসর্পোট সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত হন। সাহানুর আগে আলিপুকুরের হালদার পাড়ায় থাকতেন। বছর পাঁচেক আগে মহিশালি গ্রামে তিন কাঠা জায়গা কিনে একতলা বাড়ি বানান। সেখানে বছর দশেকের ছেলে ও স্ত্রীকে
নিয়ে থাকতেন।
এ দিন ভোররাত থেকেই সাহানুরের বাড়ির সামনে টহল দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সাহানুরের ভাই শেখ মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘সিবিআই কেন এসেছিল আমরা জানি না। তবে আমাদের সল্টলেকের পাসপোর্ট অফিসে যেতে বলে গিয়েছে তারা।’’
প্রতিদিন সকাল ৭টার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ফিরতেন অনেক রাতে। পড়শিদের সঙ্গেও তেমন কথা বলতেন না। তবে এলাকায় ‘ভাল ছেলে’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সকাল ১০টা নাগাদ সাহানুরকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পরই বাড়িতে ভিড় জমান পড়শিরা। পাড়ার ছেলে কোনও দুর্নীতিতে যুক্ত থাকতে পারে, তা বিশ্বাস করতে পারছে না এলাকার বাসিন্দারা। এক প্রৌঢ় পড়শির কথায়, ‘‘শান্ত ছেলে। নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকত। সে কোনও দুর্নীতিতে যুক্ত, মন মানতে চাইছে না।’’