Child Death

বালককে অপহরণ করে খুন, দোষী পড়শি 

নিহতের নাম শুভ হালদার। সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। পরিবার সূত্রে খবর, ঘটনার সন্ধ্যায় টিউশন সেরে এসে শুভ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আর ফেরেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ০৯:২৬
Share:

নিহত শুভ। নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবেশী বছর দশেকের বালককে অপহরণের পরে খুন, তারপরে তার পরিবারের থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে গিয়েছিল উত্তম বিশ্বাস নামে জনাইয়ের চিকরন্ড জলাপাড়ার এক যুবক। ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির ওই খুনের ঘটনায় বুধবার উত্তমকে দোষী সাব্যস্ত করলেন শ্রীরামপুর আদালতের প্রথম জেলা ও দায়রা বিচারক মনোজ কুমার রাই। হয়েছেন। কাল, শুক্রবার উত্তমের সাজা ঘোষণার কথা। অভিযুক্ত অন্য তিন জন প্রমাণাভাবে বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

Advertisement

নিহতের নাম শুভ হালদার। সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। পরিবার সূত্রে খবর, ঘটনার সন্ধ্যায় টিউশন সেরে এসে শুভ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আর ফেরেনি। পরের দিন চণ্ডীতলা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। মামলার তথ্যে জানা গিয়েছে, শুভর বাড়ির লোকেরা জানতে পারেন, নিখোঁজ হওয়ার সন্ধ্যায় শুভকে দেখা গিয়েছিল উত্তমের সঙ্গে। উত্তম অবশ্য জানায়, শুভ কোথায়, সে জানে না। পরের দিন সে এলাকা ছাড়ে। পরে শুভর বাবা গোকুল দেবনাথের মোবাইলে এসএমএস করে উত্তম জানায়, এই কাজ (অপহরণ) তারা চার জন মিলে করেছে। এর পরে ফোন করে কখনও ৭০ লক্ষ, কখনও ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা নিয়ে কখনও হাবড়া, কখনও বারাসত বা বনগাঁয় যেতে বলে। চণ্ডীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গোকুল। পুলিশের সহায়তায় উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় গিয়েও উত্তমের দেখা মেলেনি।

ঘটনার ৬ দিন পরে উত্তমের বাড়ির কাছে খেলার সময় ছোটদের একটি ফুটবল খড়ের গাদায় চলে যায়। বল আনার জন্য খড়ের আঁটি টানতেই শুভর দেহ দেখা যায়। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। গাইঘাটা থেকে উত্তমকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য তিন অভিযুক্তও গ্রেফতার হন। পরে মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। উত্তমের জামিন মেলেনি। তার ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ হয়। অন্য তিন জন কলকাতা হাই কোর্ট থেকে জামিন পান। ঘটনার সময় উত্তমের বয়স ছিল ২৪ বছর। তার স্ত্রী-মেয়ে আছে। নিখোঁজ হওয়ার সন্ধ্যায় অন্যদের মতোই শুভকে ‘খুঁজেছিল’ উত্তম-সহ চার অভিযুক্তই।

Advertisement

মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, ৩৬৪এ (অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া এবং মৃত্যুভয় দেখানো বা হত্যা করা), ৩০২ (খুন) এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) ধারায় বুধবার উত্তমকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ৩৬৪এ এবং ৩০২ দু’টি ধারাতেই সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড, সর্বনিম্ন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

জয়দীপ জানান, আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, অপহরণের পরেই জ্যাকেটের দড়ি গলায় পেঁচিয়ে শুভকে খুন করা হয়। শুভর গলায় ওই দড়ি মেলে। সেটি যে উত্তমেরই জ্যাকেটের, ফরেন্সিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়। অপহরণ ও মুক্তিপণ নিয়ে মোবাইলের যাবতীয় তথ্য ও এসএমএস মুছে ফেলেছিল উত্তম। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাও পুনরুদ্ধার হয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। গোকুলের বক্তব্য, উত্তমদের ধারণা হয়েছিল, তাঁর কাছে অনেক টাকা আছে। সেই কারণেই ছেলেকে অপহরণ করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement